সংক্ষিপ্ত/রচনামূলক>> কং/নায়েক হতে এ এস আই(নিঃ) পদে পদোন্নতি পরিক্ষার প্রস্তুতিমূলক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন/উত্তর








 ১// গ্রেফতার কাকে বলে? কখন কি পরিস্থিতিতে পুলিশ কাউকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারে?

২// সাক্ষ্য কাকে বলে? সাক্ষ্য কত প্রকার ও কি কি? একজন বোবালোক,অতিবৃদ্ধ বা অল্প বয়স্ক বালক কি আদালতে সাক্ষ্য দিতে পারে আলোচনা করো?


৩//  এ এস আই হিসেবে নৈশকালে পুলিশ টহল দলের দলনেতার দায়িত্ব পালন করছেন,হঠাৎ ডাকাতির সংবাদ পেলে এ সময় আপনি কি কি পদক্ষেপ নিবেন?


৪// রাত্রিকালে ডিউটিরত অবস্থায় আপনি হঠাৎ সংবাদ পেলন কাহারো বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র আছে, এই রকম সংবাদ পেলে আপনার করণীয় কি আলোচনা করুন?

৫// থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/ OC/ অফিসার ইনচার্জ কাকে বলা হয়? একজন এস আই, এ এস আই বা কনষ্টবল কি থানার অফিসার ইনচার্জ হতে পারেন? থানা হাজতে আসামীর মৃত্যু বা আত্মহত্যা করলে ডিউটি অফিসার হিসেবে তোমার করণীয় কি???

৬// আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত  অধিকার বলতে কি বুঝায়? কোন কোন ক্ষেত্রে আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত  অধিকার প্রয়োগ করা যায়? আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার এ  কারো মৃত্যু ঘটানো যায় কি?? এ এস আই নিঃ (পুস্তক সহ)২০১৭

৭// এজাহার বা FIR কাকে বলে? এজাহারের মূল শর্ত বা বৈশিষ্ট কি কি এবং এজাহারে কোন কোন বিষয়ে যত্নবান হতে হবে? কোন কোন পদের পুলিশ অফিসার লিপিবদ্ধ করতে পারেন? এজাহার লিপিবদ্ধ করা পর কি আর বাতিল করা যায়?
 

৮// হৈচৈ বিজ্ঞপ্তি ও ইনকোয়ারি কাকে বলে? কখন এবং কি পরিস্থিতিতে পুলিশ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন? আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের সময় কি কি নিয়ম পালন করতে হবে? আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের পর পুলিশ অফিসারের করনীয় কি?

৯// জব্দ তালিকা বা সিজার লিস্ট কাকে বলে? একটি উদ্ধারকৃত পিস্তলের জব্দ তালিকা তৈরি করে দেখান? জব্দ তালিকা প্রস্তুত করার আইনগত ভিত্তি কি?


১০// মৃত্যুকালীন জবানবন্দি কি? কোন কোন পদবীর ব্যাক্তিগণ মৃত্যুকালীন জবানবন্দি রেকর্ড করতে পারেন? কি কি নিয়ম মেনে মৃত্যুকালীন জবানবন্দি রেকর্ড করতে হয়? মৃত্যুকালীন জবানবন্দি রেকর্ডের পরে যদি ঐ ব্যাক্তি সুস্থ বা বেঁচে যায় তবে ঐ রেকর্ডের গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু?

১১//  স্বীকারোক্তি কাকে বলে? কখন স্বীকারোক্তি প্রাসঙ্গিক বা গ্রহণযোগ্যতা পায় এবং কখন অপ্রাসঙ্গিক বা গ্রহণযোগ্য পায়না বা আদালতে প্রাসঙ্গিক নয়? আসামী স্বীকারোক্তি না করলে কি কি দলিল আদালতে উপস্থাপন মামলা প্রমাণ করা?


১২// 
আমলযোগ্য অপরাধ বা ধর্তব্য কাকে বলে? আমলযোগ্য অপরাধের সংবাদ আসার পরের প্রক্রিয়া গুলো কি কি বা তদন্ত প্রক্রিয়া আলোচনা করো?


১৩//  সমন কাকে বলে ? কোন ব্যক্তির উপর সমন কিভাবে জারি করতে হয় তার পদ্রধতি আলোচনা করো ?


১৪// ইউডি কেস বা অস্বাভাবিক মৃত্যু বা অপমৃত্যু মামলা কাকে বলে? কোন কোন মৃত্যুতে অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়? অপমৃত্যুজনিত কোন ব্যাক্তির মৃতদেহটি কবরস্থ হলে তা কি আবার উঠানো যায়?
 

১৫// হত্যামূলক ফাঁসি কাকে বলে? কি কি চিহ্ন বা লক্ষণ দ্বারা হত্যামূলক ফাঁসি বোঝা যায়?

১৬// সুরতহাল রিপোর্ট কি? সুরতহাল প্রস্তুতের কি কি বিষয় উল্লেখ থাকতে হবে?


১৭//  অপমৃত্যু বা অস্বাভাবিক মৃত্যু সংবাদ আসলে পুলিশ অফিসারের করণীয় কি? অথবা পরিচয়হীন মৃতদেহ পরে আছে এমন সংবাদ পেলে পুলিশ অফিসারের করণীয় কি?

 ১৮// তল্লাশি পরোয়ানা কাকে বলে? তল্লাশীর পূর্বে, সময়ে ও পরে কি কি নিয়ম পালন করতে হবে? পুলিশ হেফাজতে থাকা কোন ব্যক্তির দেহ তল্লাশির বিধান আছে কি?


১৯// কমান্ড সার্টিফিকেট কাকে বলে? কোন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্য ইস্যূ করেন? এই সার্টিফিকেটের উপর কি কি উল্লেখ থাকে? কোন কোন ক্ষেত্রে এটি ইস্যু করা হয়? এটা প্রদানের উদ্দেশ্য কি? 

 ২০// হুলিয়া কাকে বলে? হুলিয়া জারির পদ্ধতি আলোচনা করো। 


২১.//ক্রোকি পরোয়ানা এবং ক্রোক কাকে বলে? ক্রোকি পরোয়ানা তামিল কিভাবে করতে হয়? 


২২//  কোন আসামিকে আদালতে হাজির বা পলাতক বা ফেরার আসামিকে হাজির করানোর জন্য আদালত কি কি পদক্ষেপ নিতে পারেন? 


 ২৩//  পুলিশ আইনের ৩৪ ধারা শর্ত ও পূর্বশর্তগুলো কিকি?? একজন পুলিশ অফিসার তার থানা এলাকায় কিভাবে অপরাধ নিবারণ ও অপরাধী দমন করবেন?

২৪// ভিলেজ ক্রাইম নোট কাকে বলে? ইহা কয় ভাগে বিভক্ত,ও কি কি?


২৫//মামলা তদন্তে এএসআই এর ভূমিকা কি? একজন এএস আই কিভাবে মামলা তদন্তকারী অফিসারকে সহায়তা করতে পারে?


২৬// পুলিশ এ্যাক্ট ১৮৬১ এ বর্ণিত বিধানের মাধ্যমে আপনি পুলিশ অফিসার হিসেবে কিভাবে আপনার থানা এলাকায় অপরাধ নিবারণ ও অপরাধীকে দমন করবেন ব্যাখ্যা করেন?



  ২৭// অসদাচরণ কাকে বলে? কর্তব্য সম্পাদন কালে কোন কার্যক্রম গুলোকে অসদাচরণ বলা হয়ে থাকে? 


 
২৮//অযোগ্য/অধর্তব্য অপরাধের কোন কোন ক্ষেত্রে পুলিশ অফিসার বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারে? ফৌজদারি কার্যবিধি আইনে আলোচনা করো? 


২৯// মাদকদ্রব্য কাকে বলে? মাদকদ্রব্য আইন অনুযায়ী বিনা পরোয়ানায় তল্লাশির পদ্ধতি আলোচনা করেন। 


৩০// পুলিশ আইন অনুযায়ী পুলিশ অফিসারের ক্ষমতা কি কি? পুলিশ অফিসার কি ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে? 

৩১// অবৈধ জনতা বলতে কি বোঝেন? বৈধ জনতা কি অবৈধ হতে পারে? অবৈধ জনতা ছত্রভঙ্গ করার ক্ষেত্রে পুলিশ অফিসারের করণীয় কি?




  ***************************************************************************************
****************************************************************************************



 ১// গ্রেফতার কাকে বলে? কখন কি পরিস্থিতিতে পুলিশ কাউকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারে?


- গ্রেফতারঃ ১৮৯৮ সালে প্রণীত ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৪৬ ধারা মোতাবেক সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে কথা বা কার্য দ্বারা আইনানুগ ভাবে কোন ব্যক্তির নাগরিক অধিকার ও ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করে পুলিশ হেফাজতে বা সরকারী  হেফাজতে নেওয়াকেই গ্রেফতার বলে।                        ফৌজদার কার্যবিধি  ৪৬ ধারা
                         পিআরবি-৩১৬ বিধি

ফৌজদারি কার্যবিধি আইনে যে সকল ধারায় পুলিশ অফিসার বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারে তা নিম্নে বর্ণনা করা হলোঃ-

(১) যে ব্যক্তি ধর্তব্য অপরাধ করেছে বলে পর্যাপ্ত কারন আছে বা প্রমান আছে এমন ব্যক্তিকে সন্দেহ করে পুলিশ অফিসার বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারেন। ফৌঃ কাঃ ৫৪ (১) উপধারা

(২) আইনানুগ কারন ছাড়া যার নিকট ঘর ভাঙ্গার যন্ত্রপাতি আছে তাকে পুলিশ অফিসার বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারেন। ফৌঃ কাঃ ৫৪(২) উপধারা

(৩) আদালত কর্তৃক ঘোষিত অপরাধী কে পুলিশ অফিসার বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারবেন।
ফৌঃকাঃ ৫৪(৩) উপধারা

(৪) যার নিকট চোরাই মাল পাওয়া যাবে তাকে পুলিশ অফিসার বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারবেন। ফৌঃ কাঃ ৫৪(৪) উপধারা


(৫) পুলিশের আইনানুগ কাজে বাধা প্রদানকারী  ব্যক্তি কে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারেন। ফৌঃ কাঃ ৫৪(৫) উপধারা
(৬) সামরিক বাহিনী হতে পলায়নকারী ব্যক্তিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যাবে। ৫৪(৬) উপধারা

(৭)  দেশে করলে অপরাধ বিদেশে সেই অপরাধ করে ফিরে আসলে। ফৌঃ কাঃ ৫৪(৭)

(৮) জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত অাসামি ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৫৬৫(৩) ধারা অমান্য করলে। ফৌঃ কাঃ ৫৪(৮)

(৯) কোন ব্যক্তি কে গ্রেফতারের জন্য অন্য পুলিশ অফিসারের অনুরোধ পত্র পাওয়া গেলে। ফৌঃ কাঃ ৫৪(৯)

(১০)  থানার অফিসার ইনচার্জ যদি দেখেন তার থানা এলাকায় কোন ব্যক্তি তার উপস্থিতি গোপন করে আমলযোগ্য অপরাধ করার জন্য সাবধানতা অবলম্বন করছে বা এমন ব্যক্তি  যার প্রকাশ্য কোন জীবিকা নাই,নিজের সম্পর্কে সঠিক বিবরণ দেয়না অথবা চোর, ডাকাত,গৃহভঙ্গকারী বলে পরিচিত কোন ব্যক্তি অবস্থান করছে তবে তাকে পুলি সশ অফিসার বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারেন। ফৌঃ কাঃ ৫ট ধারা

(১১)  আমল অযোগ্য অপরাধীকে জিজ্ঞাসা করার পর সঠিক নাম ঠিকানা না দিলে । ফৌঃ কাঃ ৫৭ ধারা

(১২) বেআইনী সমাবেশ ছত্রভঙ্গের আদেশ অমান্য ও উপেক্ষা করলে। ফৌঃকাঃ ১২৭,১২৮ ধারা

(১৩)  ফৌজদারি কার্যবিধি  ১২৪(৬) ধারা জামিনের শর্ত অমান্য করলে এবং আদালত ১২৪(৬) বাতিল করলে।

(১৪) আমলযোগ্য অপরাধের ষরযন্ত্রের ব্যক্তি কে। ফৌঃকাঃ ১৫১ ধারা

(১৫) সাক্ষী বা ফরিয়াদী আদালতে হাজির হয়ে মুচলেকা সম্পাদন করতে অস্বিকার করলে পুলিশ অফিসার বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারবেন। ফৌঃ কাঃ ১৭১ ধারা

ফৌজদারি কার্যবিধিঃ ৪৬, ৫৪(১-৯), ৫৫,৫৭, ১২৪(৬),১২৭,১২৮,১৫১,১৭১



২// সাক্ষ্য কাকে বলে? সাক্ষ্য কত প্রকার ও কি কি?  একজন বোবালোক,অতিবৃদ্ধ বা অল্প বয়স্ক বালক কি আদালতে সাক্ষ্য দিতে পারে আলোচনা করো? এ এস আই নিঃ (পুস্তক সহ) ২০১৭

উত্তরঃ সাক্ষ্য:- যে সকল দলিল, বস্তু, এবং বিবৃতি উপস্থাপন করে আদালত কোন বিচার্য বিষয় বা প্রাসঙ্গিক বিষয় পমাণ করে থাকেন তাকেই সাক্ষ্য বলা হয়। সাক্ষ্য আইন ৩ ধারা।
সাক্ষ্য দুই প্রকার:- (১) মৌখিক সাক্ষ্য    (২) দালিলিক সাক্ষ্য

(১) মৌখিক সাক্ষ্য: আদালত কোন বিচার্য বিষয় বা প্রাসঙ্গিক বিষয় প্রমানের জন্য সাক্ষীর নিকট হতে যে বিবৃতি বা জবানবন্দি গ্রহণ করেন তাকেই মৌখিক সাক্ষ্য বলা হয়। সাক্ষ্য আইন ৬০ ধারা
(২) দালিলিক সাক্ষ্য : কোন দলিল বা লিপিবদ্ধ বস্তু আদালতে উপস্থাপন করে পরিদর্শন করাকেই দালিলিক সাক্ষ্য বলে। সাক্ষ্য আইন ৬১ ধারা।

দালিলিক সাক্ষ্য আবার দুই প্রকারঃ (১) প্রাথমিক সাক্ষ্য  (২) মাধ্যমিক সাক্ষ্য

(১) প্রাথমিক সাক্ষ্য: মূল দলিল আদালতে হাজির করাকেই প্রাথমিক সাক্ষ্য বলে। সাক্ষ্য আইন ৬২ ধারা।
(২) মাধ্যমিক সাক্ষ্য: মূল দলিলের অনুলিপি বা প্রতিলিপি আদালতে হাজির করাকেই মাধ্যমিক সাক্ষ্য বলে। সাক্ষ্য আইন ৬৩ ধারা


আদালতের বিচার্য বিষয় বা প্রাসঙ্গিক বিষয় প্রমানের জন্য কোন বোবালোক আদালতের প্রশ্ন বুঝে ইশারা বা আকার ইঙ্গিতে কিংবা লিখিত জবাব দিতে সক্ষম হয় তবে আদালতে তার সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে।সাক্ষ্য আইন ১১৯ ধারা।
আবার একজন অতি বৃদ্ধ  বা অল্পবয়স্ক বালক আদালতের প্রশ্ন বুঝে যদি জবাব দিতে পারেন সেই ক্ষেত্রে তাদের সাক্ষ্য ও গ্রহণযোগ্য হবে। সাক্ষ্য আইন ১১৮ ধারা।

সাক্ষ্য আইন: ৩,৬০,৬১,৬২,৬৩,১১৮,১১৯ ধারা





৩//  এ এস আই হিসেবে নৈশকালে পুলিশ টহল দলের দলনেতার দায়িত্ব পালন করছেন,হঠাৎ ডাকাতির সংবাদ পেলে এ সময় আপনি কি কি পদক্ষেপ নিবেন?

উত্তর: এ এস আই হিসেবে রাত্রীকালে পুলিশ দলের দলনেতার দায়িত্ব পালন করাকালে কোন ডাকাতি অপরাধের সংবাদ পেলে যে সকল পদক্ষেপ  গ্রহণ করব তা নিম্নে আলোচনা করা হলো:-
 পিআরবি ২০৭(ঘ),৩৫৬ বিধি

(১) প্রথমে ডাকাতির বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা,সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেলকে এবং পুলিশ সুপার সাহেবকে সংবাদ দেব। ফৌঃ কাঃ ১৫০ ধারা,পুলিশ আইন ২৩ ধারা, পিআরবি ১২০ বিধি

(২) উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত করার জন্য সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্য তারাতারি রওনা দেব। ফৌঃ কাঃ ১৫৬/১৫৭ ধারা, পুলিশ আইন ২৩ ধারা, পিআরবি ১৪৫ বিধি।

(৩) ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেখানকার অবস্থান ভালোভাবে পরিদর্শন করব।পরিদর্শনের সময় সংরক্ষন করার জন্য প্রয়োজনীয় স্থান বা বস্তু ঘিরে রাখবো। এবং পুলিশ পাহারার ব্যবস্থা করবো। ফৌঃ কাঃ ১৫৬ ধারা, পিআরবি ২৫৮,৬৩৫ বিধি

(৪)  সন্দেহজনক কাউকে পেলে বা ডাকাত মনে হলে তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করবো। ফৌঃ কাঃ ৫৪ ধারা, পিআরবি ৩১৬ বিধি


(৫)  লুণ্ঠিত হয়ে যাওয়া মালামালের তালিকা সংগ্রহ করব। পিআরবি ২৪৭ বিধি

(৬) চারিদিকে ছড়িয়ে ছিঁটিয়ে পড়া আলামত সংগ্রহ করব। এবং জব্দ তালিকা তৈরী করে সাক্ষীদের স্বাক্ষর  নেব। ফৌঃ কাঃ ১০৩(২), পি আরবি ২৮০ বিধি।


(৭) আশেপাশের স্থান ও এলাকাসমূহে তল্লাশী কার্যক্রম  চালু করব, ডাকাতির মালামাল উদ্ধার করার জন্য। ফৌঃকাঃ ১০২,১০৩,১৬৫,১৬৬ ধারা।


(৮) ঘটনাস্থলে কোন আহত ব্যক্তি থাকল তাকে চিকিৎসার  জন্য হাসপাতালে পাঠাবো। পিআর বি ৩১২ বিধি


(৯) ডাকাতির স্থানে একটি খসরা মানচিত্র তৈরি করব। পিআরবি ২৭৩ বিধি


(১০) আসামীদের গ্রেফতার, মালামাল উদ্ধার, এবং মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য এলাকায় গুপ্তচর  নিয়োগ করবো। সাক্ষ্য আইন ১২৫ ধারা, পি আরবি ২৯৩,৩৪১ বিধি।

(১১) থানায় এসে বিষয়টি জেনারেল ডায়রীতে লিপিবদ্ধ করব। ফৌঃ কাঃ ১৫৪,১৫৫, পুলিশ আইন ৪৪, পিআরবি ৩৭৭ বিধি।

(১২) থানার অফিসার ইনচার্জকে বিস্তারিত ঘটনার বিবরণ জানাব। পরবর্তী  আইনানুগ ব্যবস্থা  তিনি গ্রহণ করবেন। ফৌঃ কাঃ ১৬৮ ধারা।

ফৌঃ কাঃ ১৫০, ১৫৬, ১৫৭, ৫৪, ১০৩(২), ১০২,১০৩, ১৬৫,১৬৬,১৫৪,১৫৫,১৬৮
পুলিশ আইন:  ২৩,৪৪
সাক্ষ্য আইন; ১২৫ ধারা।
পিআরবি:- ২০৭(ঘ), ৩৫৬, ১২০, ১৪৫, ২৫৮, ৬৩৫,৩১৬, ২৪৭, ২৮০, ৩১২, ২৭৩, ২৯৩,৩৪১,৩৭৭ বিধি।


৪// রাত্রিকালে ডিউটিরত অবস্থায় আপনি হঠাৎ সংবাদ পেলন কাহারো বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র আছে, এই রকম সংবাদ পেলে আপনার করণীয় কি আলোচনা করুন?



উত্তরঃ  রাত্রিকালে ডিউটিতে অবৈধ অস্ত্রের সংবাদ পেলে পেলে আমার যা করণীয় তা নিম্নে আলোচনা করা হলো:-

(১) অবৈধ অস্ত্রের বিষয়টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল, পুলিশ সুপার স্যারকে  প্রথমে অবগত করব। ফৌঃকাঃ ১৫০ ধারা,পুলিশ আইন ২৩ ধারা, পিআরবি ১২০ বিধি

(২) অবৈধ অস্ত্রের ঐ যায়গা বা বাড়িতে  সশস্ত্র পুলিশ পাহারার ব্যবস্থা করবো।  পিআরবি ১৪৫ বিধি

(৩) অবৈধ অস্ত্রের উদ্ধারের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট এর নিকট তল্লাশি পরোয়ানার আবেদন করবো। পুলিশ আইন ২৪ ধারা, পিআরবি ২১৩ বিধি।

(৪) ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট হইতে তল্লাশি পরোয়ানা নিয়ে অবৈধ  অস্ত্র উদ্ধারের কাজ শুরু করব। এবং ততল্লাশির সকল নিয়ম কানুন মনে চলবো।  অস্ত্র আইন ২৫ ধারা, ফৌ কাঃ ১০২,১০৩ ধারা, পিআরবি ২৮০ বিধি


(৫) প্রথমে গৃহের মালিক হতে অনুমতি নেব,এবং স্থানীয় উপযুক্ত ২/৩ জন সাক্ষী  ডাকবো। ফৌঃকাঃ ১০২(১), ১০৩(১) ধারা।

(৬) নিজেদের শরীর সাক্ষী ও গৃহের মালিক দ্বারা তল্লাশি করাবো। ফৌঃকাঃ (১০৩(৩) ধারা।

(৭) তল্লাশির সময় গৃহের মধ্যে কোন অবৈধ অস্ত্র পাওয়া গেলে মালিক গ্রেফতার করবো।  ফৌঃ ককাঃ ৫৪(১) ধারা।

(৮) সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ০৩(তিন) কপি জব্দ তালিকা তৈরি করব এবং সাক্ষীদের স্বাক্ষর নেব। ফৌঃকাঃ ১০৩(২) উপধারা

(৯) অবৈধ অস্ত্রের বিষয়টি জিডি এন্ট্রী করবো। ফৌঃকাঃ ১৫৪,১৫৫, পুলিশ আইন ৪৪, ধারা পিআরবি ৩৭৭ বিধি।

(১০)  অবৈধ অস্ত্র টি থানার সম্পত্তি রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করবো। পিআরবি ৩৭৯ বিধি

(১১) অবৈধ অস্ত্রের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা রুজূ করে কোর্টে চালান করে দেব। অস্ত্র আইন ১৯ ক ধারা।

(১২)  অবৈধ  অস্ত্র উদ্ধারের সম্পূর্ণ বিবরণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলবো। ফৌঃকাঃ ১৬৮ ধারা




ফৌঃকাঃ- ১৫০,১৫৪,১৫৫,১০২,১০৩,১০২(১),১০৩(১),(২), ৫৪(১),১৬৮ ধারা।
পুলিশ আইনঃ- ২৩,২৪,৪৪, ধারা।
অস্ত্র  আইনঃ- ২৫,১৯ ক ধারা।
পিআরবিঃ- ১২০,৩৭৭,২৮০, ৩৭৯,২১৩,১৪৫,বিধি।


৫// থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/ OC/ অফিসার ইনচার্জ কাকে বলা হয়? একজন এস আই, এ এস আই বা কনষ্টবল কি থানার অফিসার ইনচার্জ হতে পারেন? থানা হাজতে আসামীর মৃত্যু বা আত্মহত্যা করলে ডিউটি অফিসার হিসেবে তোমার করণীয় কি???


উত্তরঃ অফিসার ইনচার্জ বা ওসিঃ  ১৮৯৮ সালে প্রণীত ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৪( ত) ধারা মোতাবেক একটি ধানার নিয়োজিত পুলিশ অফিসারকে  ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ওসি বা অফিসার ইনচার্জ বলা হয়ে থাকে। ফৌঃ কাঃ ৪(ত) ধারা। পি আর বি ২০১ বিধি।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  ছুটিতে,অসুস্থতায় বা অন্য কোন কারনে অনুপস্থিত থাকলে এস আই পদের পুলিশ অফিসার  থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে নিয়োজিত হতে পারেন। ফৌঃকাঃ ৪(ত) ধারা,পিআরবি ২০১ বিধি।

এস আই পদের কোন পুলিশ অফিসার থানায় উপস্থিত না থাকলে তবে এ এস আই অফিসার ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করতে পারবে। ফৌঃ কাঃ ৪(ত) ধারা, পি আরবি ২০৭ (গ) বিধি

এস আই বা এ এস আই কেহই থানায় হাজির না থাকলে, কনষ্টবলের কাছে যদি থানার মালখানার চাবি থাকে সেক্ষেত্রে  কনষ্টবল ও অফিসার ইনচার্জ হিসেবে গণ্য হবেন। পি আরবি ২৩৯ ক বিধি।


থানা হাজতে আসামীর মৃত্যূ হলে  ডিউটি অফিসার হিসেবে আমার যা করণীয় তা নিম্নে আলো চনা করা হলোঃ--


(১) মৃত্যুর বিষয়টি জেনারেল ডাইরীতে লিখে রাখতে হবে।  পুলিশ আইনের ৪৪ ধারা, ফৌঃকাঃ ১৫৪,১৫৫, পিআরবি ৩৭৭

(২) ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সুপারকে দ্রুত টেলিফোন বা বেতকরযোগে জানাতে হবে।  পুলিশ আইনের ২৩ ধারা, ফৌঃকা ১৫০ ধারা, পি আরবি ৩০২ খ বিধি।

(৩) পুলিশ অফিসার কর্তৃক বাদী  হয়ে অপমৃত্যু মামলা দায়ের করতে হবে,এবং তদন্ত কার্যক্রম শুরু করতে হবে। ফৌঃ কাঃ ১৭৪ , পুলিশ আইন ২৪, পিআরবি ২১৩,২৯৯ বিধি।

(৪) মৃতদেহের অবস্থান একই রাখতে হবে নড়াচরা করানো যাবেনা, তদন্তের সার্থে ছবি তুলে রাখতে হবে।

(৫) ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত হলে তার কাছে তদন্তভার দায়িত্ব  অর্পন করে দিতে হবে। এবং ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে নিতে হবে। মৃতের চালান ফরমে স্বাক্ষর নিতে হবে। ফৌঃকাঃ ১৭৬(১) উপধারা, পিআরবি ৩০২ খ বিধি।

(৬) দুই জন কনষ্টবল সিসির মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেটের প্রস্তুতকৃত  সুরতহাল রিপোর্ট ও চালান ফরম সহ মৃতদেহটি মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে মৃত্যুর সঠিক কারন নির্ণয়ের জন্য। পিআরি ৩০৪,৩০৫ বিধি।

(৭) মৃতের ময়না তদন্ত ও সকল পররীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তাহার আত্মীয় স্বজনদের কাছে বুঝিয়া দিতে হবে। পিআরবি ৩১০ বিধি

৬// আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত  অধিকার বলতে কি বুঝায়? কোন কোন ক্ষেত্রে আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত  অধিকার প্রয়োগ করা যায়? আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার এ  কারো মৃত্যু ঘটানো যায় কি?? এ এস আই নিঃ (পুস্তক সহ)২০১৭


উত্তরঃ- ১৮৬০ সালে প্রণীত দন্ডবিধি আইন অনুসারে যদি কোন ব্যক্তির অথবা অপর কোন ব্যক্তির জানমাল এবং সরকারী সম্পত্তির ক্ষতির সম্মূখীন হয় তবে তা রক্ষা করার জন্য আক্রমন কারীর বিরুদ্ধে দন্ডবিধি আইনের ৯৯ ধারায় শর্ত সাপেক্ষে যে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তাকে আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার বলা হয়।। দঃ বিঃ ৯৬,৯৭ ধারা।।

দন্ডবিধি ৯৯ ধারার  শর্ত সাপেক্ষ যে সকল ক্ষেত্রে আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার প্রয়োগ করা যায়ঃ


(১) নিজের ও অপরের জানমাল এবং সরকারী সম্পত্তি ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার জন্য আক্রমনকারীর বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার প্রয়োগ করা যায়। দঃ বিঃ ৯৬,৯৭ ধারা।

(২)  অপ্রকৃত বা পাগল ব্যক্তির কার্যের বিরুদ্ধে এই অধিকার প্রয়োগ করা যায়। ৯৮ ধারা

(৩) গুরুতর আঘাত,ধর্ষণের উদ্দেশ্য, চরিত্রহরণ, অপহরণ,  অন্যায়ভাবে আটক করে আক্রমন করলে আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করা যায়। দঃবি ১০০ ধারা।

(৪) দেহের মৃত্যু ঘটানো ছাড়াও অন্যরকম বড় কোন ক্ষতি করার চেষ্টা থাকলে আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার প্রয়োগ করা যায়। দঃ বিঃ ১০১ ধারা


(৫)  সম্পত্তি রক্ষার ক্ষেত্রে:: দস্যুতা, বেআইনীভাবে গৃহে প্রবেশ, গৃহ-তাবু বা যানবাহন, জাহাজে আগুন ধরালে,,চুরি,অনিষ্ট বা বাসস্থানে বেআইনীভাবে প্রবেশ করে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যেখানে আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ না করলে মৃত্যু বা বড় কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। দঃ বিঃ ১০৩ ধারা।

(৬)  সম্পত্তির ক্ষেত্রে মৃত্যু ঘটানো ছাড়াও অন্যরকমভাবে ক্ষতির উদ্যাশ্য এবং নিরাপরা ধ ব্যক্তির মারাত্মক আক্রমনের ক্ষেত্রেও আক্রমণকারীর ক্ষেত্রে ও আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার প্রয়োগ করা যায়। দঃবিঃ ১০৪,১০৬ ধারা।
পিআরবি ১৫৩ বিধি।


যে সকল ক্ষেত্রে মৃত্যু ঘটানো যায়>


(১) গুরুতর আঘাত,ধর্ষণের উদ্দেশ্য, চরিত্রহরণ, অপহরণ,  অন্যায়ভাবে আটক করে আক্রমন করলে আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করা যায়। দঃবি ১০০ ধারা।

(২) সম্পত্তি রক্ষার ক্ষেত্রে:: দস্যুতা, বেআইনীভাবে গৃহে প্রবেশ, গৃহ-তাবু বা যানবাহন, জাহাজে আগুন ধরালে,,চুরি,অনিষ্ট বা বাসস্থানে বেআইনীভাবে প্রবেশ করে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যেখানে আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ না করলে মৃত্যু বা বড় কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এই রকম ক্ষেত্রে এই অধিকার প্রয়োগ করে মৃত্যু ও ঘটানো যায়। দঃ বিঃ ১০৩ ধারা।


(৩) সম্পত্তির ক্ষেত্রে মৃত্যু ঘটানো ছাড়াও অন্যরকমভাবে ক্ষতির উদ্যাশ্য এবং নিরাপরা ধ ব্যক্তির মারাত্মক আক্রমনের ক্ষেত্রেও আক্রমণকারীর ক্ষেত্রে ও আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার প্রয়োগ করে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটানো যায়। দঃবিঃ ১০৪,১০৬ ধারা।


৭// এজাহার বা FIR কাকে বলে? এজাহারের মূল শর্ত বা বৈশিষ্ট কি কি এবং এজাহারে কোন কোন বিষয়ে যত্নবান হতে হবে? কোন কোন পদের পুলিশ অফিসার লিপিবদ্ধ করতে পারেন? এজাহার লিপিবদ্ধ করা পর কি আর বাতিল করা যায়?

উত্তরঃ  এজাহারঃ ১৮৯৮ সালে প্রণীত ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৫৪ ধারা অনুসারে,যদি কোন আমলযোগ্য অপরাধ ঘটিত সংবাদ থানায় আসলে,তা যদি লিখিত অথবা মৌখিক আকারের ও হয়ে থাকে, তবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওসি উক্ত বিবরণটি নির্ধারিত বিপি ফরম নং- ২৭ এবং বাংলাদেশ ফরম নং- ৫৩৫৬ এ লিপিবদ্ধ করে থাকেন, একেই এজাহার বা FIR,  প্রাথমিক তথ্য বিবরণী বলা হয। ফৌঃ কাঃ ১৫৪ ধারা, পিআরবি ২৪৩ (গ) বিধি


এজাহারের শর্ত বা বৈশিষ্ট এবং যেগুলো তে যত্নবান হতে হবে তা নিম্নে দেওয়া হলো:-
১.এজাহার অবশ্যই বিপি ফরম নং ২৭ বালাদেশ ফরম নং - ৫৩৫৬ নির্ধারিত সরকারী ফরম হতে হবে।

২. এজাহারে আমল যোগ্য অপরাধ যেমন- দাঙ্গা হাঙ্গামা,খুন,ডাকাতি,চুরি ইত্যাদি এমন হতে হবে।

৩. সংবাদাতা মৌখিক বললেও সংবাদ টি লিখিত হতে হবে।

৪. ঘটনাস্থলের স্থান, দূরত্ব, দিক ও থানা ও জেলার নাম উল্লেখ থাকতে হবে।

৫. এজাহার রেকর্ডের সময় ও তারিখ উল্লেখ থাকতে হবে।

৬. সংবাদ দাতার পূর্ণ নাম ও ঠিকানা থাকতে হবে।

৭. সংবাদ দাতার টিপসই বা স্বাক্ষর নিতে হবে।

৮. ঘটনার তারিখ ও সময় উল্লেখ থাকতে হবে।

৯. আসামীর নাম, পূর্ন ঠিকানা,পরিবারের নাম,বয়স উল্লেখ থাকতে হবে

১০.  অভিযোগে লুণ্ঠিত মালের বিররণ  ও মূল্য উল্লেখ থাকতে হবে।

১১. প্রমাণের কাজে লাগবে এমন বস্তু বা জিনিস পাওয়া গেলে এজাহারে উল্লেখ করতে হবে।

১২. এজাহারে তথ্য বিলম্বে রেকর্ড করলে তার কৈফিয়ত উল্লেখ করতে হবে।

১৩. মামলায় মাস ও বছরের ক্রমিক নং উল্লেখ থাকতে হবে।

১৪. এজাহার রেকর্ডকারী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার স্বাক্ষর থাকতে হবে।

১৫. এজাহারটি থানা হতে কোর্টে প্রেরণের তারিখ উল্লেখ করতে হবে।

উপরোক্ত বিষয়গুলি এজাহার রেকর্ডের সময় যত্নশীল হতে হবে।

কোন কোন পদের পুলিশ অফিসার এজাহার রেকর্ড করতে পারেন তা নিচে আলোচনা করা  হলো:-

   থানার একমাত্র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওসি এজাহার লিপিবদ্ধ করতে পারেন। ফৌঃ কাঃ ৪ (ত) ধারা, পিআরবি ২০১ (ক)

এছারাও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কোন কারনে অনুপস্থিত থাকলে থানার এস আই এজাহার লিপিবদ্ধ করতে পারবেন। ফৌঃ কাঃ  ৪(ত)  ধারা,পি আরবি ২০১( গ) বিধি।

যদি এস আই না থাকেন সেক্ষেত্রে এ এস আই লিপিবদ্ধ করতে পারবেন। ফৌঃ কাঃ ৪(ত) ধারা,পি আর বি ২০৭( গ) বিধি।
যদি কোন এ এস আই উপস্থিত না থাকে তবে কনষ্টবল ও এজাহার গ্রহণ করতে পারবে। পিআরবি ২৩৯ (ক) বিধি ও পি আরবি ২৪৩ (ছ) বিধি।
একজন এ এস পি বা সহকারী পুলিশ সুপার থানার দায়িত্বে থাকলে,সেক্ষেত্রে তিনিও এজাহার লিপিবদ্ধ করতে পারবেন । ফৌঃকাঃ ৫৫১ ধারা।

এজাহার লিপিবদ্ধ করার পরে আর কোন ভাবেই তা আর বাতিল করা যাবেনা। পিআরবি ২৪৩ (জ) বিধি। 


৮// হৈচৈ বিজ্ঞাপন বা ইনকোয়ারি কাকে বলে? কখন এবং কি পরিস্থিতিতে পুলিশ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন? আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের সময় কি কি নিয়ম পালন করতে হবে? আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের পর পুলিশ অফিসারের করনীয় কি?
এ এস আই নিঃ (পুস্তক ব্যতীত) - ২০১৭


উত্তরঃ
হৈ চৈ বিজ্ঞপ্তিঃ
কোন পলাতক আসামিকে গ্রেফতারের জন্য বা চুরি বা ডাকাতির বস্তু বা মাল উদ্ধারের জন্য বিপি ফরম ২৮ মোতাবেক পার্শ্ববর্তী  থানাগুলোতে যে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয় তাকেই হৈচৈ বিজ্ঞপ্তি বলে। পিআরবি ২৫০ বিধি
জরুরী নোটিশঃ

অনুসন্ধানঃ
 কোন বিষয়ে তদন্তে যাওয়ার পূর্বভাগেই যে তথ্য সংগ্র করা হয় তাকেই অনুসন্ধান বা ইনকোয়ারি বলে। যখন কোন পুলিশ অফিসার কোন ম্যাজিষ্ট্রেট বা আদালত কর্তৃক বিচার ব্যতীতকোন অপরাধ সংঘটনের রহস্য বা তথ্য উদঘাটন করে তাকে অনুসন্ধান বলে। ফৌঃ কাঃ ৪(ট) ধারা ,পিআরবিঃ ২৮০ নিয়ম, ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১০২,১০৩, ১৫৩,১৬৫,১৬৬ ধারা

 যে সকল ক্ষেত্রে  পুলিশ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে তা নিম্নে আলোচনা করা হলো:-
পিআরবি ১৫৩ বিধি অনুসারে


   ১. নিজের জিবন ও সম্পত্তি, অপরের জিবন ও সম্পত্তি  এবং সরকারী সম্পত্তি রক্ষার্থে, দন্ডবিধি ৯৯ ধারায় শর্ত সাপেক্ষে, কোন প্রকার দুষ্টু আক্রমনকারীর আক্রমন প্রতিহত করতে পুলিশ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। দঃ বিঃ - ৯৬,৯৭,৯৮,১০০,১০৩,১০৬ ধারা।


২. বে আইনী সমাবেশ  ও দাঙ্গা হাঙ্গামা ছত্রভঙ্গ করার জন্য পুলিশ অফিসার যখন বার বার সতর্ক করে হুশিয়ারী দেয়।  কোন প্রকারের বল প্রয়োগ করে ও ফল পাওয়া যায়না। যখন এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যে, সরকারী সম্পত্তি  ও বেসরকারি  সম্পত্তি  এবং জন সাধারণের বড় ক্ষতি হতে পারে। তখন পুলিশ অফিসার আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন। ফৌঃ কাঃ ১২৭(১), ১২৮ ধারা, পুলিশ আইন ৩০ (১) ক ধারা, পিআরবি ১৪৩, ১৫৩ বিধি।


৩. যখন কোন আসামীর যাবজ্জীবন অথবা মৃত্যুদন্ডের সাজা হয়। এবং তাকে গ্রেফতারকালে সে যদি হিংস্র আচরণ বা আক্রমন করার চেষ্টা করে তাহলে তাকে গ্রেফতারের সময় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা যাবে। ফৌঃ কাঃ ৪৬(৩) ধারা, পিআরবি ১৫৩(ঘ) বিধি।


 

আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের সময় যে সকল নিয়ম পালন করা উচিত:-


১.কোন পরিস্থিতিতে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের পূর্বে পুলিশ অফিসার অবশ্যই জোরে জোরে সতর্কবাণী উচ্চারিত করবেন। আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের সময় প্রয়োজনের তুলনায় বড় কোন ক্ষতি না করাই উচিত হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করে দিতে হবে। পিআরবি ১৫৪ বিধি।


২. আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের কারনে বড় ধরনের ক্ষতি বা জখম যেনো খুব কম হয়,সেই দিকে পুলিশ অফিসারের খেয়াল রাখতে হবে। আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার এমন ভাবে নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে করতে হবে যেনো অল্প ক্ষতির মাধ্যমে উদ্দেশ্য সফল হয়। পিআরবি ১৫৬ বিধি।


আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের পর পুলিশ অফিসারের করণীয় গুলোঃ


১. আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের যদি কেউ মৃত্যুবরণ করে,তবে যত শীঘ্রই মৃতদেহটি মর্গে পাঠাতে হবে। এবং আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠাতে হবে।


২. ব্যবহৃত গুলির খোসা গুলো সংগ্রহ করতে হবে এবং পরিমাণ মিলিয়ে নিতে হবে।আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার,গুলির পরিমান, বিস্তারিত ঘটনার বিবরণ যত দ্রুত সম্ভব জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার,ও আইজি সাহেবের নিকট রিপোর্ট পাঠাতে হবে। ফৌঃ কাঃ ১৫০ ধারা,পুলিশ আইন ২৩ ধারা, পিআরি ১৫৬ বিধি।




৯// জব্দ তালিকা বা সিজার লিস্ট কাকে বলে? একটি উদ্ধারকৃত পিস্তলের জব্দ তালিকা তৈরি করে দেখান? জব্দ তালিকা প্রস্তুত করার আইনগত ভিত্তি কি কি?


উত্তরঃ    জব্দ তালিকা বা সিজার লিস্ট: -     কোন মামলার সাথে সম্পৃক্ত এমন বস্তু বা আলামত, বেওয়ারিশ সম্পত্তি,চোরাইমাল,আগ্নেয়াস্ত্র, এবং সন্দেহজনক কোন বস্তু বা জিনিস উদ্ধার করার উদ্দেশ্য পুলিশ অফিসার যখন ঘটনাস্থলে হাজির হয়,তখন স্থানীয় সাক্ষীদের উপস্থিত রেখে, ঐ সকল মালামাল উদ্ধার করে এবং তা হেফাজতে নিয়ে স্বাক্ষীদের স্বাক্ষর সহ বিপি ফরম নং- ৪৪ বাংলাদেশ ফরম নং-৫২৭৬ এ ০৩ ( তিন) কপিতে যে তালিকা প্রস্তুত করা হয় তাকেই জব্দ তালিকা বা সিজার লিস্ট বলা হয়।

ফৌঃ কাঃ ১০৩(২), পিআরবি- ২৮০,৪৬৫ বিধি।





১৮৯৮ সালে প্রণীত ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১০৩(২) ধারা এবং পিআরবি ২৮০,৪৬৫ বিধি মোতাবেক একটি পিস্তলের জব্দ তালিকার প্রস্তুতপ্রণালী নিম্নে দেওয়া হলো:-


 জব্দ তালিকা
( বিপি ফরম নং-৪৪)


সূত্রঃ নাটোর সদর থানার মামলা নং- ১০/১৬ তারিখঃ ১৬/১০/২০১৭ খ্রিঃ।


০১। জব্দ করার তারিখ ও সময়ঃ তারিখঃ ১৭/১০/১৭ খ্রিঃ, সময়ঃ ১১:৪০ ঘটিকা।


০২। জব্দ করার স্থানঃ মোঃ মিজানুর রহমান, পিতাঃ মোঃ আবুল হোসেন দোকান নং-১০ ,দত্তপারা বাজার,নাটোর সদর, দোকানে ক্যাশ বাক্স থেকে প্রাপ্ত।





০৩। সাক্ষীদের নাম ঠিকানাঃ


(১) মোঃ আলতাফ, পিতাঃ আঃ করিম।                  আহম্দেদ পুর,নাটোর।
(২) মোঃ মিজান,পিতাঃ মোঃ শহিদুল।                                "
(৩) মোঃ আনিছ, পিতা- মোঃ ছাত্তার                                  "




০৪। জব্দকৃত মালামালের বিবরণঃ একটি ৯ এম এম পিস্তর,বাট নং- ১৫৯, মেড ইন চায়না।
০৫। সাক্ষীদের স্বাক্ষর ঃ
১)আলতাফ
২)মিজান
৩)আনিছ

প্রস্তুতকারী
এসআই/ মোঃবারেক ভূঁইয়া
নাটোর  সদর থানা,নাটোর




জব্দ তালিকা প্রস্তুত করার আইনগত ভিত্তিঃ
জব্দতালিকার আইনগত ভিত্তি কি তা নিচে আলোচনা করা হলোঃ
১.আদালতের ব্যাখ্যা বা উপস্থাপনা মূলক হিসেবে জব্দ তালিকা প্রাসঙ্গিক বা গ্রহণযোগ্য। সাক্ষ্য আইন ৯ ধারা।
২.সরকারি কর্মচারীর কর্তব্য সম্পাদনকালে সরকারি দলিল(বিপি নং ৪৪) লিপিবদ্ধ হিসেবে জব্দ তালিকা  আদালতে গ্রহণ যোগ্য।  সাক্ষ্য আইন ৩৫ ধারা।
৩. একটি বিশুদ্ধ দলিল হিসেবে গণ্য হবে জব্দ তালিকা। সাক্ষ্য আইন ৮০ ধারা।
৪. কোন ঘটনার বিচার কালে তার পূর্বে লিপিবদ্ধ বিষয় হিসেবে জব্দ তালিকা আদালতে প্রাসঙ্গিক। সাক্ষ্য আইন ১৪৫ ধারা
৫.বাদীর সাক্ষী সমর্থন করে জব্দ তালিকা আদালতে প্রাসঙ্গিক। সাক্ষ্য আইন ১৫৭ ধারা
৬. দুই বা ততোধিক ব্যক্তি সাক্ষী হিসেবে থাকবেন জব্দ তালিকা প্রস্তুতের সময়। ফৌঃকাঃ ১০৩(১) ধারা
৭.সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ০৩ কপিতে জব্দ তালিকা তৈরি করতে হয়,এবং সাক্ষীদের স্বাক্ষর নিতে হয়। ফৌঃকাঃ ১০৩(২) ধারা


১০// মৃত্যুকালীন জবানবন্দি কি? কোন কোন পদবীর ব্যাক্তিগণ মৃত্যুকালীন জবানবন্দি রেকর্ড করতে পারেন? কি কি নিয়ম মেনে মৃত্যুকালীন জবানবন্দি রেকর্ড করতে হয়? মৃত্যুকালীন জবানবন্দি রেকর্ডের পরে যদি ঐ ব্যাক্তি সুস্থ বা বেঁচে যায় তবে ঐ রেকর্ডের গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু?
এ এস আই নিঃ (পুস্তক ব্যতীত) -২০১৭


উত্তরঃ মৃত্যুপথযাত্রী এমন কোন ব্যক্তি যদি তার মৃত্যুর পূর্বের কারণ গুলো কারো নিকট বিবৃতি করতে চায়,তবে সেই বিবৃতি রেকর্ডকেই মৃত্যুকালীন জবানবন্দি বলা হয়। সাক্ষ্য আইন ৩২(১) ধারা, পিআরবি ২৬৬ বিধি।


যে সকল পদের ব্যক্তিগণ মৃত্যুকালীন জবানবন্দি রেকর্ড করতে পারেনঃ

১. ম্যাজিস্ট্রেট।  ফৌঃকাঃ- ১৬৪ পিআরবি ৪৬৭ বিধি।

২. পুলিশ অফিসার

৩.ডাক্তার

৪. চেয়ারম্যান

৫. ইউপি সদস্য

৬. চৌকিদার

ফৌঃ কাঃ ১৬১ ধারা পিআরবি ২৬৫ বিধি


যে সকল নিয়ম মেনে মৃত্যুকালীন জবানবন্দি রেকর্ড করতে হবেঃ-

১.মৃত্যুকালীন জবানবন্দির সময় ২ অথবা ৩ জন সাক্ষী  উপস্থিত রাখতে হবে। এবং তাদের স্বাক্ষর নিতে হবে।

২. জবানবন্দিকারী যে ভাষায় বিবৃতি প্রদান করতে চায়,সেই ভাষায় রেকর্ড করতে হবে।

৩. বিবৃতির স্থান,তারিখ ও সময় উল্লেখ রাখতে হবে।

৪. জবানবন্দিকারীর স্বাক্ষর নিতে হবে।


মৃত্যুকালীন জবানবন্দি রেকর্ডের পরবর্তিতে যদি ঐ ব্যক্তি সুস্থ  বা বেঁচে যায় তবে আর তা মৃত্যুকালীন জবানবন্দি হিসেবে গণ্য হবে না।
যদি ম্যাজিস্ট্রেট এর নিকট রেকর্ড হয় তবে তা স্বীকৃতি বা স্বীকারোক্তি হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পাবে। সাক্ষ্য আইন- ২৪ ধারা, ফৌঃ কাঃ ১৬৪ ধারা, পি আরবি ৪৬৭ বিধি।

অন্য কাহারো নিকট রেকর্ড হলে মৌখিক সাক্ষ্য হিসেবে গণ্য হবে  ফৌঃ কাঃ ১৬১ ধারা, পিআরবি ২৬৫ বিধি।
এছাড়া মৃত্যুকালীন জবানবন্দির পূর্ববর্তী  বিবৃতি সাক্ষ্য ও সমর্থনমূলক সাক্ষ্য হিসেবে আদালতে উপস্থাপন করা যাবে। সাক্ষ্য আইন ১৪৫ ও ১৫৭ ধারা।


১১//  স্বীকারোক্তি কাকে বলে? কখন স্বীকারোক্তি প্রাসঙ্গিক বা গ্রহণযোগ্যতা পায় এবং কখন অপ্রাসঙ্গিক বা গ্রহণযোগ্য পায়না বা আদালতে প্রাসঙ্গিক নয়? আসামী স্বীকারোক্তি না করলে কি কি দলিল আদালতে উপস্থাপন মামলা প্রমাণ করা?

উত্তরঃ স্বীকারোক্তিঃ যখন কোন আসামী ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট কোন রকমের ভয়-ভীতি,হুমকি,প্রলোভন ও প্রতিশ্রুতি ছাড়াই স্ব- ইচ্ছাই নিজের দোষ স্বীকার করে যে বিবৃতি প্রদান করে তাকেই স্বীকারোক্তি বলে।
 সাক্ষ্য আইন ২৪ ধারা, ফৌঃকাঃ ১৬৪ ধারা, পি আরবি ৪৬৭ বিধি।


যে সকল ক্ষেত্রে স্বীকারোক্তি প্রাসঙ্গিক বা গ্রহণ যোগ্যতা পায়ঃ

১. যখন আসামী পুলিশ হেফাজতে থাকাকালে  স্বীকারোক্তি প্রদান করে থাকেন,তবে যদি সেখানে ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত থাকে তখন স্বীকারোক্তি প্রাসঙ্গিক বা গ্রহণযোগ্য।
সাক্ষ্য আইন ২৬ ধারা, পিআরবি ২৮৩ বিধি।

২. আসামীর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে যদি কোন তথ্য বা আলামত পাওয়া যায় তা আদালতে প্রাসঙ্গিক বা গ্রহণযোগ্য। সাক্ষ্য আইন ২৭ ধারা, পি আরবি ২৯৭ বিধি।


যে সকল ক্ষেত্রে স্বীকারোক্তি অপ্রাসঙ্গিক বা গ্রহণযোগ্য পায়নাঃ বা অপ্রাসঙ্গিক-

১. আসামি যদি প্রলোভন, ভীতিপ্রদর্শন,প্রতিশ্রুতি সহকারে স্বীকারোক্তি প্রদান করে তাহলে এই স্বীকারোক্তি আদালতে গ্রহণ যোগ্য নয়। সাক্ষ্য আইন ২৪ ধারা, ফৌঃকাঃ ১৬৩,১৬৪ ধারা,পিআরবি ৪৬৭ বিধি

২.পুলিশ অফিসারের কাছে স্বীকারোক্তি প্রদান করলে তা গ্রহনযোগ্য নয়।


৩.যদি আসামী পুলিশ হেফাজতে থাকাকালে স্বীকারোক্তি প্রদাণ করে, তবে যদি ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত না থাকে তবে সেই স্বীকারোক্তি  অপ্রাসঙ্গিক বা গ্রহণযোগ্য নয়। সাক্ষ্য আইন ২৬ ধারা। পিআরবি ২৮৩ বিধি

৪.পুলিশ হেফাজতে আসামীর স্বীকারোক্তিতে যদি তথ্য বা আলামত পাওয়া যায় তবে তা অপ্রাসঙ্গিক বা অগ্রহণযোগ্য। সাক্ষ্য আইন ২৭ ধারা। পিআরবি ২৯৭ বিধি


আসামী স্বীকারোক্তি প্রদান না করলে যে সকল দলিল আদালতে উপস্থাপন করে মামলা প্রমাণ করা যায় তা নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ

১. এজাহার দাখিল করে। ফৌঃকাঃ ১৫৪ ধারা, পিআরবি ২৪৩ বিধি

২. জব্দতালিকা।  ফৌঃ কাঃ ১০৩(২), পিআরবি ২৮৩ বিধি

৩. সুরতহাল রিপোর্ট। ফৌঃ কাঃ ১৭৪ ধারা, পিআরবি ২৯৯ বিধি।

৪. মৌখিক জবানবন্দি।  ফৌঃ কাঃ ১৬১ ধারা, পিআরবি ২৬৫ বিধি, সাক্ষ্য আইন ৯,৬০ ধারা।

৫. মৃত্যুকালীন জবানবন্দি।   সাক্ষ্য আইন ৩২(১) ধারা, পিআরবি ২৬৬ বিধি।

৬.গোপনে ধারনকৃত ছবি,রেকর্ডকৃত কথাবার্তা। দ্রুত আইন ১৪ ধারা।

৭. আলামত বা বস্তুগত সাক্ষ্য।  সাক্ষ্য আইন ৭,৯,৪৫ ধারা।

৮. ময়না তদন্তের রিপোর্ট। সাক্ষ্য আইন ৯,৪৫ ধারা, পিআরবি ৩০৬ বিধি।

৯. লিপিবদ্ধ চার্জশিট।  ফৌঃ কাঃ ১৭৩ ধারা, পিআরবি ২৭২ বিধি

১০. বিশেষজ্ঞের মতামত।  সাক্ষ্য আইন ৯, ৪৫,৪৬,৪৭ ধারা।


12//  আমলযোগ্য অপরাধ বা ধর্তব্য কাকে বলে? আমলযোগ্য অপরাধের সংবাদ আসার পরের প্রক্রিয়া গুলো কি কি বা তদন্ত প্রক্রিয়া আলোচনা করো? এ এস আই নিঃ ( পুস্তক ব্যতীত)  ২০১৭


 উত্তরঃ আমলযোগ্য অপরাধঃ    ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের দ্বিতীয় তফসিল বা বর্তমানে প্রচলিত বলবৎ অন্য কোন আইন অনুসারে পুলিশ অফিসার যে অপরাধের কারনে অপরাধীকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করে, তাকেই আমলযোগ্য অপরাধ বা ধর্তব্য অপরাধ বলে। ফৌঃ কাঃ ৪( চ), পিআরবি ৩১৬ বিধি।

আমলযোগ্য  অপরাধের সংবাদ আসার পরের প্রক্রিয়া বা তদন্তের প্রক্রিয়া নিচে আলোচনা করা হলো ঃ

 ১. আমলযোগ্য অপরাধের সংবাদ থানায় আসলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  মামলা রেকর্ড করবেন। ফৌঃ কাঃ ১৫৪ ধারা, পিআরবি ২৪৩( গ)

২. ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজে তদন্ত করবেন। প্রয়োজনবোধে অন্য কোন এস আই এর কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেবেন। ফৌঃ কাঃ ১৫৬ ধারা।

৩. তদন্তকারী অফিসার দায়িত্ব পেলে এজাহারটি  ভালো ভাবে পড়ে নেবেন ও নোট নেবেন। ফৌঃ কাঃ ১৫৪ ধারা, পিআরবি ২৪৩ বিধি।

৪. মামলার সুবিধার্থে অতিদ্রুত পার্শ্ববর্তী থানা সমূহে হৈ চৈ বিজ্ঞাপন ইস্যূ করবেন। পিআরবি ২৫০ বিধি।

৫. তদন্ত শুরুর পূর্বেই থানার বিশেষ রেজিস্টার তদন্ত সহায়ক ভিসিএনবি পর্যালোচনা করে নোট নিতে হবে। পিআরবি ২৫৬ বিধি।

৬. তদন্তে রওনা দেবার সময় ৩ জন পুলিশ সদস্যকে সঙ্গে নিতে হবে। পুরো পোশাকে অস্ত্র গুলি সহ জিডিতে নোট দিয়ে সিসি,ক্যামরা,ও প্রয়োজনীয় উপকরনসহ দ্রুত ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্য রওনা  দিতে হবে। ফৌঃ কাঃ ১৫৪,১৫৫ ধারা, পুলিশ আইন ৪৪ ধারা, পিআরবি ৩৭৭,১৫৩,৯০৯,৯৫১ বিধি।

৭. ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেলে,ঘটনাস্থল ভালো করে পরিদর্শন করে নিতে হবে। এবং সংরক্ষনের জন্য পুলিশ পাহারার ব্যবস্থা করতে হবে। ফৌঃকাঃ ১৫৬ ধারা, পিআরবি ২৫৮,১৪৫ বিধি।

৮. ঘটনাস্থলে যদি কোন আলামত বা কোন বস্তু পাওয়া যায় তবে তা সাক্ষীদের উপস্থিত রেখে তাদের স্বাক্ষর নিয়ে জব্দ তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের মতামতের সাহায্য নিতে হবে। ফৌঃ কাঃ ১০৩(২),  পিআরবি ২৮০,২৯৭,  সাক্ষ্য আইন ৪৫ ধারা।

৯. ঘটনাস্থলের খসরা মানচিত্র ও সূচিপত্র তৈরি করতে হবে। পিআরবি ২৭৩ বিধি।

১০. ভিকটিম,নিরপেক্ষ এবং প্রতক্ষ্যদর্শীদের  জবানবন্দি নিতে হবে। ফৌঃকাঃ ১৬১ ধারা, পিআরবি২৬৫ বিধি ,সাক্ষ্য আইন ৬০ ধারা।

১১.লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারের জন্য তদন্ত কার্যক্রম চালু করতে হবে। ফৌঃ কাঃ ১০২,১০৩১৬৫ ধারা পিআরবি ২৮০ বিধি, পুলিশ আইন ২৩(৮), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ৩৬ ধারা।

১২. মালাশাল উদ্ধার ও অপরাধী গ্রেফতার ও রহস্য উদঘাটনের জন্য গুপ্তচর নিয়োগ করতে হবে। পিআরবি ২৯৩,৩৪১,  সাক্ষ্য আইন ১২৫ ধারা।

১৩. যদি কেউ মৃত্যুর পথে থাকে তবে তার দ্রুত মৃত্যুকালীন জবানবন্দি  রেকর্ড করতে হবে। সাক্ষ্য আইন ৩২(১), পিআরবি ২৬৬ বিধি।

১৪. কারো মৃত্যু হয়ে থাকলে তবে ঐ মৃতদেহেরর সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। ফৌঃ কাঃ ১৭৪, পিআরবি ২৯৯ বিধি।

১৫. ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহটি একজন পুলিশ সদস্য সহ দ্রুত সিভিল সার্জের নিকট পাঠাতে হবে। পিআরবি ৩০৪,৩০৫ বিধি।

১৬. ময়না তদন্ত শেষে মৃতদেহটি আত্মীয়  স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। পিআরবি ৩১০ বিধি।

১৭.যদি মৃতদেহটি অপরিচিত হয় বা শনাক্ত করা না যায়,তবে তার আঙ্গুলের ছাপ,তার ছবি ও ঘটনাস্থলের ছবি প্রত্রিকায় প্রকাশ করার ব্যবস্থা করতে হবে। পিআরবি ৩১৩,৩১৪,৬৩৫,৬৩৮ বিধি।

১৮. মামলার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করতে হবে। ফৌঃ কাঃ ৪৬(১)৪৭,৪৮,৪৯,৫০,৫১,৫২,৫৩,১০২,১০৩, ,পিআরবি ৩১৬,২৮০ বিধি ( ধারা ও নিয়ম অনুসরণ করতে হবে)

১৯. আসামী গ্রেফতার হলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নিতে হবে। ফৌঃ কাঃ ১৬৭,পিআরবি ৩২৪ বিধি।

২০. আসামী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চাইলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটেরর নিকট হাজির করিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করতে হবে। ফৌঃ কাঃ ১৬৪,৩৬৪ পিআরবি ৪৬৭  সাক্ষ্য আইন ২৪,৩০ ধারা।

২১.তদন্তের ফলাফল ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানাতে হবে। ফৌঃ কাঃ ১৬৮ ধারা

২২. আসামী গ্রেফতারের পর ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে পাঠাতে হবে। ফৌঃ কাঃ ৬১ ধারা, পিআরবি ৩২৪ বিধি, বাংলাদেশ সংবিধান ৩৩(২) অনুচ্ছেদ।

২১. আসামীর অপরাধ প্রমাণীত হলে বিপি ফরম নং ৩৯ মতে চার্জশীট প্রদান করতে হবে। আর যদি অপরাধ প্রমাণীত না হয় তবে বিপি ফরম নং ৪২ মতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করতে হবে। ফৌঃ কাঃ ১৭৩ ধারা, পিআরবি ২৭২, ২৭৫ বিধি।


১৩//  সমন কাকে বলে ? কোন ব্যক্তির উপর সমন কিভাবে জারি করতে হয় তার পদ্ধতি আলোচনা করো ?

উত্তরঃ কোন মামলার বাদী বা সাক্ষীকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট হতে প্রস্তুতকৃত  সীল মোহরযুক্ত স্বাক্ষরীত আদেশ নামাকে সমন বলে।
ফৌঃকাঃ৬৮ধারা ,পিআরবিঃ ৪৭১(ঘ)নিয়ম।

সমন জারির পদ্ধতি নিচে আলোচনা হলোঃ

(১) সমন যে ব্যক্তির উপর জারি করা হবে, তার কাছে সমনের এক কপি দিয়ে অন্য কপিতে প্রাপ্তি স্বীকারে স্বাক্ষর নিতে হবে।
ফৌঃকাঃ ৬৯(১)ধারা।

(২) যদি একের অধিক ব্যক্তির উপর সমন জারি করতে হয়, তাহলে প্রত্যেকের স্বাক্ষর কপিতে নিতে হবে।
ফৌঃকাঃ ৬৯(২)ধারা।

(৩) যদি কোন কোম্পানী বা কোন প্রতিষ্টানের নামে সমন জারি করতে হয়, তবে সেই কোম্পানীর মালিক অথবা ম্যানেজারের নিকট সমনের এককপি বুঝিয়ে দিয়ে দ্বিতীয়  কপিতে স্বাক্ষর নিতে হবে।
ফৌঃকাঃ ৬৯(৩)ধারা।

(৪) যে ব্যক্তির উপর সমন জারি করা হবে সে যদি তার বসত বাড়িতে উপস্থিত না থাকেন, তাহলে সেই ব্যক্তির বাড়ীর যে কোন স্বাবলম্বী কোন পুরুষ মানুষের কাছে সমনের এককপি বুঝিয়ে দিয়ে প্রাপ্তী স্বীকারে স্বাক্ষর নিতে হবে।
ফৌঃকাঃ৭০ধারা।

(৫) যদি ঐ বাড়িতে কাউকেই উপস্থিত না পাওয়া যায়, তাহলে তার বাড়ীর প্রকাশ্য স্থানে বা বসবাসের প্রকাশ্য স্থানে দুই বা তিন জন স্থানীয় ব্যক্তি উপস্থিত রেখে,  সাক্ষী স্বরূপ তাদের দেখিয়ে লটকিয়ে দিয়ে সমন জারি করতে হবে।
ফৌঃকাঃ৭১ ধারা।

(৬) যদি কোন ব্যক্তি  সরকারী কর্মচারী হয় তার উপর সমন জারি করতে হলে তার অফিস প্রধানের নিকট সমনের ২ কপি প্রেরণ করতে হবে ।  যে ব্যক্তির উপর সমন জারি করা হবে তাকে এককপি দিয়ে ২য় কপিতে প্রাপ্তী স্বীকার নিয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে পাঠাইতে হবে ।
ফৌঃকাঃ ৭২ ধারা পিআরবি ৪৭১(ঙ)বিধি।

(৭)যে ব্যক্তির উপর সমন জারি করা হবে, সেই ব্যক্তি যদি উক্ত আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে না থাকে তবে সে যেই আদালতের সীমা রেখায় অবস্থান করছেন সেই আদালতের নিকট প্রেরণ করে সমন জারির ব্যবস্থা নিতে হবে।
ফৌঃকাঃ৭৩ ধারা। পিআরবি ৪৭১ (ঘ) বিধি।
(৮) যদি কোন ব্যক্তি দেশের বাহিরে থাকে তবে তার নামেও সমন জারি করার ব্যবস্থা করতে হবে। ফৌঃ কাঃ ৯৩ ধারা।


১৪// ইউডি কেস বা অস্বাভাবিক মৃত্যু বা অপমৃত্যু মামলা কাকে বলে? কোন কোন মৃত্যুতে অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়? অপমৃত্যুজনিত কোন ব্যাক্তির মৃতদেহটি কবরস্থ হলে তা কি আবার উঠানো যায়?
 

উত্তরঃ  যদি কোন ব্যক্তির প্রাকৃতিক নিয়মের বাহিরে মৃত্যু হয় তাকেই অপমৃত্যু বা অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে।  আর এ মৃত্যুর কারনে যে মামলা রেকর্ড করা হয় তাকেই অপমৃত্যু বা অস্বাভাবিক মৃত্যু বা ইউডি কেস বলে। ফৌঃ কাঃ ১৭৪ ধারা, পিআরবি ২৯৯ বিধি।

যে সকল মৃত্যুতে অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড হয়ে থাকে তা নিচে দেওয়া হলোঃ
১. গলায় ফাঁস জনিত মৃত্যু।
২. বিষপানে মৃত্যু।
৩. হিংস্র পশু ও প্রাণীর আক্রমনে মৃত্যু।
৪. পাহার বা মাটি চাপায় মৃত্যু।
৫. নৌযান চালিত যানবাহন ডুবে মৃত্যু।
৬. পানিতে ডুবে মৃত্যু।
৭.বজ্রপাতে মৃত্যু।
৮. বৈদ্যুতিক শর্টে মৃত্যু।
৯. গাছ বা ছাদ থেকে পরে মৃত্যু।
১০. আগুনে পুরে মৃত্যু।
১১. সরক দূ্র্ঘটনায় মৃত্যু।
১২. আগ্নেয়াস্ত্রের কারনে মৃত্যু
১৩. যান্ত্রিক যন্ত্রপাতি চালাতে গিয়ে মৃত্যু।

অপমৃত্যুজনিত কোন ব্যক্তির মৃতদেহ কবর দেয়ার পর যদি ঐ ব্যক্তির মৃত্যু সম্পর্কে সন্দেহ দেখা দেয়। তবে পুলিশ অফিসারের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে ম্যাজিস্ট্রেট কে অবগত করতে হবে। ১ ম শেণীর ম্যাজিস্ট্রেটেরর উপস্থিতিতে মৃতদেহটি উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য সিভিল সার্জনের নিকট প্রেরণ করতে হবে। ফৌঃ কাঃ ১৭৬(২) ধারা। পিআরবি ৩০৩ বিধি।

১৫// হত্যামূলক ফাঁসি কাকে বলে? কি কি চিহ্ন বা লক্ষণ দ্বারা হত্যামূলক ফাঁসি বোঝা যায়?


উত্তরঃ যদি কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তিকে হত্যা করার পর, ঐ মৃতদেহটি ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখে অপরাধটি গোপন করার চেষ্টা করে তাকেই হত্যামূলক ফাঁসি বলা হয়। দঃ বিঃ ৩৪,১০৯,৩০০,৩০২,ধারা

যে সকল লক্ষণ দেখে বোঝা যায় হত্যামূলক ফাঁসি,তা নিচে দেয়া হলোঃ

১. হত্যামূলক ফাঁসিতে মৃতদেহের ঝুলন্ত রশিতে  একাধিক গিট থাকে,ও রশির গিটগুলো শক্ত করে বেঁধে রাখা থাকে।

২. ঘাড়ে ও গলা বরাবর সমান দাগ ও গোলাকার দাগ থাকে, একধিক বিভিন্ন দাগও থাকে।

৩. মৃতদেহের শরীরে বিভিন্ন স্থানে ক্ষতচিহ্ন দেখা যায়। এবং ধস্তাধস্তি হয়েছে লক্ষ করা যায়।

৪. মৃতদেহের মুখে লালা পড়ার চিহ্ন পাওয়া যায়না।

৫. যে ঘরে মৃতদেহটি পাওয়া যাবে সেই ঘরটির দরজা ও জানালা খোলাই থেকে যায়।

৬. মৃতদেহের হাত, পা বাঁধা থাকে,যেটা ঐ ব্যক্তির দ্বারা কখনই সম্ভব ছিলোনা।

৭.চোখ বন্ধ থাকবে, দাঁতে কামর দেয়া থাকবেনা।

৮. আশে পাশে চেয়ার,টুল থাকবেনা যেটা দিয়ে ঝুলন্ত দেবার কথা।

৮. প্রতিহিংসামূলক আক্রমণ বা পূর্বশত্রুতার কারনে এই জঘণ্য অপরাধগুলো হয়।


দঃবিঃ ৩৪,১০৯,৩০০,৩০২ ধারা, ফৌঃ কাঃ ১৭৪ ধারা, পিআরবি ২৯৯, ৩০৪,৩০৬,৩০৭ বিধি।


১৬// সুরতহাল রিপোর্ট কি? সুরতহাল প্রস্তুতের কি কি বিষয় উল্লেখ থাকতে হবে?
এ এস আই নিঃ (পুস্তক ব্যতীত) ২০১৭

উত্তরঃ যদি কোন ব্যক্তি আত্মহত্যায়,খুন,দূর্ঘটনায় বা অস্বাভাবিকভাবে প্রাকৃতিক নিয়মের বাহিরে মৃত্যুবরণ করেন, তবে তার মৃতদেহের সমস্ত বর্ণনা উল্লেখ করে পুলিশ অফিসার বা ম্যাজিস্ট্রেট যে রিপোর্ট প্রস্তুত করেন তাকেই সুরতহাল রিপোর্ট বলে। ফৌঃ কাঃ ১৭৪ ধারা, পিআরবি ২৯৯ বিধি।

 যে বিষয় গুলো সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ থাকবে তা নিচে দেয়া হলেঃ

১. প্রথমেই সূত্র উল্লেখ করতে হবে।

২. প্রস্তুতের তারিখ ও সময় উল্লেখ থাকতে হবে।

৩.  ঘটনাস্থলের বর্ণনা থাকতে হবে।

৪. মৃত ব্যক্তির, ধর্ম,লিঙ্গ, নাম বয়স ও পূর্ণ ঠিকানা থাকতে হবে।

৫. তিনজন সাক্ষীদের নাম ও পূর্ণ ঠিকানা।

৬. মৃত ব্যক্তি মহিলা হলে,মহিলা দ্বারা পরীক্ষা করতে হবে ও ঐ পরীক্ষাকারীর নাম ও পূর্ণ ঠিকানা।

৭. মৃতের শরিরে পোশাক আছে বা নাই এবং কি ধরনের পোশাক তার বর্ণনা থাকতে হবে।

৮. মৃতের শরীরে থাকা সকল বস্তু ও দ্রব্যাদির বর্ণনা উল্লেখ করতে হবে।

৯. শরীরের প্রাকৃতিক ও বর্তমানের আঘাত ও ক্ষতের বর্ণনা করতে হবে।

১০. মৃত্যুর সম্ভবত কারন সম্পর্কে বর্ণনা করতে হবে।

১১. প্রস্তুতকারী অফিসারের  মন্তব্য।

১২. সাক্ষীগণদের  স্বাক্ষর নিতে হবে

১৩. প্রস্তুতকারী অফিসারের স্বাক্ষর , নাম,পদবী ,কর্মস্থলের বর্ণনা উল্লেখ করতে হবে।
ফৌঃকাঃ ১৭৪ ধারা, পিআরবিঃ ২৯৯,৩০৪,৩০৫,৩০৬


১৭//  অপমৃত্যু বা অস্বাভাবিক মৃত্যু সংবাদ আসলে পুলিশ অফিসারের করণীয় কি? অথবা পরিচয়হীন মৃতদেহ পরে আছে এমন সংবাদ পেলে পুলিশ অফিসারের করণীয় কি?

উত্তরঃ অপমৃত্যু বা অজ্ঞাত কোন মৃতদেহের সংবাদ থানায় আসলে পুলিশ অফিসারের যা করণীয় তা নিচে আলোচনা করা হলোঃ

১. অপমৃত্যু সংবাদের বিষয়টি জেনারেল ডাইরীরে লিপিবদ্ধ করতে হবে।  ফৌঃ কাঃ ১৫৪,১৫৫ ধারা,পুলিশ আইন ৪৪ ধারা, পিআরবি ৩৭৭ বিধি।

২. অপমৃত্যুর সংবাদের বিষয়টি উর্ধ্বতন পুলিশ অফিসার ও ম্যাজিস্ট্রেট কে অবগত করতে হবে। ফৌঃকাঃ ১৫০ ধারা,পুলিশ আইন ২৩(৩) ধারা, পিআরবি ১২০,  ও ৩০২ (খ) বিধি।

৩.পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে উদ্দেশ্য রওনা দিতে হবে। ফৌঃ কাঃ ১৫৬,১৫৭ ধারা, পিআরবি ১৪৫ বিধি।

৪.ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মৃতদেহটি পুলিশ হেফাজতে নিতে হবে,এবং ক্রাইমসিন,বস্তু বা আলামত সংগ্রহ করতে হবে। পিআরবি ২৫৮, ৬৩৫ বিধি।
৫.আলামত পাওয়া গেলে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে,তাদের স্বাক্ষরসহ একটি জব্দতালিকা প্রস্তুত করতে হবে।ফৌঃকাঃ ১০৩(২) ধারা, পিআরবি ২৮০ বিধি।

৬.সাক্ষীদের উপস্থিতিতে মৃতদেহের  সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করতে হবে। ফৌঃকাঃ ১৭৪ ধারা,পিআরবি ২৯৯ বিধি।

৭.ঘটনাস্থলের একটি খসরা মানচিত্র প্রস্তুত করতে হবে।পিআরবি ২৭৩ বিধি।

.ঘটনাস্থলের আশে পাশে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে,সন্দেহ হলে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে হবে। ফৌঃ কাঃ ৫৪ ধারা, পিআরবি ৩১৬ বিধি।

৯. যারা জবানবন্দি দিতে আগ্রহী তাদের মৌখিক জবানবন্দি নিতে হবে। ফৌঃকা১৬১ ধারা,পি আরবি ২৬৫ বিধি।


১০.যদি মৃতদেহটি সনাক্ত না হয়,তাহলে আঙ্গুলের ছাপ,পায়ের ছাপ, পূর্ণাঙ্গ ছবি তুলতে হবে এবং পরীক্ষা করার জন্য সিআইডির নিকট পাঠাইতে হবে। পিআরবি ৩১৩,৩১৪,ও ৪৯৪ বিধি।

১১. শনাক্ত যদি না হয় তবে মৃতদেহের ছবি সংবাদ পত্র,মিডিয়া ও বিজ্ঞাপনে দিতে হবে। পুলিশ আইন ২৩ ধারা,পিআরবি১১৮ বিধি।

১২. ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠাতে হবে। পিআরবি ৩০৪,৩০৫ বিধি।

১৩.ময়না তদন্ত শেষে সৎকারের ব্যবস্থা করতে হবে। পিআরবি ৩১০ বিধি।

১৪.এই ব্যপারে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হবে।ফৌঃকাঃ ১৫৪  ধারা পিআরবি ২৪৩ বিধি।


 ১৮// তল্লাশি পরোয়ানা কাকে বলে? তল্লাশীর পূর্বে, সময়ে ও পরে কি কি নিয়ম পালন করতে হবে? পুলিশ হেফাজতে থাকা কোন ব্যক্তির দেহ তল্লাশির বিধান আছে কি?

উত্তরঃ কোন মামলার আলামত, অবৈধ মালামাল,সন্দেহজনক মালামাল,মাদকদ্রব্য, অস্ত্রশস্ত্র, নকল পণ্য উদ্ধারের জন্য আদালতের যে কোন ম্যাজিস্ট্রেট নির্ধারিত ফরমে স্বাক্ষর ও সীলমোহরযুক্ত যে লিখিত আদেশনামা প্রদান করে থাকেন, তাকেই তল্লাশি পরোয়ানা বলা হয়।  ফৌঃ কাঃ ৯৬,৯৮,৯৯-ক, ১০০,১০২,১০৩,১৬৫,১৬৬ ধারা, পিআরবি ২৮০ বিধি।

তল্লাশীর পূর্বে, তল্লাশীর সময়ে, এবং পরে যে সকল নিয়ম পালন করতে হয় তা নিচে আলোচনা করা হলোঃ

তল্লাশীর পূর্বে যে যে নিয়ম পালন করতে হবেঃ

১. প্রথমে থানার জেনারেল ডাইরীতে এন্টি করে বাহির হতে হবে। ফৌঃ কাঃ ১৫৪,১৫৫ ধারা, পিআরবি ৩৭৭ বিধি।

২. গৃহ বা মালিকের অনুমতি নিতে হবে ।  ফৌঃ কাঃ ১০২(১) উপধারা।

৩.স্থানীয় ২ অথবা ৩ জন নিরপেক্ষ সাক্ষী  উপস্হিত রাখতে হবে। ফৌঃ কাঃ ৪২,১০৩(১) ধারা, পিআরবি ২৮০,৪৬৫ বিধি।

৪. নিজেদের শরীর সাক্ষী দ্বারা এবং সাক্ষী শরীর মালিকের  উপস্থিতিতে তল্লাশি করতে হবে। পিআরবি ২৮০ বিধি।

৫. পর্দানশীন কোন মহিলা থাকলে দূরে সরানোর ব্যবস্থা করতে হবে, এবং মহিলাদের তল্লাশী করার জন্য অন্য নিরপেক্ষ মহিলার ব্যবস্থা করতে হবে। ফৌঃ কাঃ ৫২ ধারা।


তল্লাশী সময়েঃ

১. গৃহের মালিক ও সাক্ষীদের উপস্থিতিতেই তল্লাশি কার্যক্রম চালাইতে হবে। ফৌঃ কাঃ ১০৩(২,৩) উপধারা।

২.তল্লাশী পরোয়ানায় যে স্থান উল্লেখ থাকবে, শুধু সেই স্থানেই তল্লাশি করতে হবে। ফৌঃ কাঃ ৯৭ ধারা

৩. সন্দেহজনক যায়গায়, ও সন্দেহজনক ব্যক্তি কে তল্লাশি করতে হবে। মহিলাদের মহিলাদ্বারা তল্লাশি করাইতে হবে। ফৌঃ কাঃ ১০২(৩), ৫২ ধারা।

৪. কাউকে অযথা হয়রানি করা যাবে না।

৫. তল্লাশিকৃত মালামাল ব্যতীত অন্য কোন মালামাল সরানো যাবেনা। ডিএমপি অধ্যাদেশ, ৫১ ৫২


তল্লাশীর পরে করনীয়ঃ

১. তল্লাশির পরে যদি কোন মালামাল পাওয়া যায়। তবে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে সেই মালামাল জব্দতালিকা করে সাক্ষীদের স্বাক্ষর নিতে হবে। ফৌঃ কাঃ ১০৩(২) উপধারা, পিআরবি ২৮০ বিধি।

২. জব্দকৃত মালামাল হেফাজতে নিয়ে তার ওপর লেবেল লাগাতে হবে। সেই লেবেলের উপর জব্দকারী অফিসার ও সাক্ষীদের স্বাক্ষর করতে হবে।  এবং জব্দতালিকার ১ কপি মালিককে দিতে হবে।
ফৌঃ কাঃ ১০৩(৩) উপধারা

৩. থানার সম্পত্তি রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ ও পিআর নাম্বার দিতে হবে এবং মালখানায় মালামাল নিরাপদে রাখতে হবে।

৪ জব্দতালিকা কোর্ট পুলিশ পরিদর্শকের মাধ্যম বরাবরে ম্যাজিস্ট্রেটেরর নিকট প্রেরণ করতে হবে। পিআরবি ২১৩ বিধি, পুলিশ আইন ২৪ ধারা।

৫. যদি তল্লাশি করে কিছু না পাওয়া যায় তবে শূন্য তল্লাশি তালিকা করে সাক্ষীদের স্বাক্ষর  নিতে হবে

আটক বা গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির অবশ্যই দেহ তল্লাশি বিধান আছে।
যে সকল ক্ষেত্রে আটক ব্যক্তি দেহ তল্লাশি করতে হবেঃ

১. কোন আটক ব্যক্তির জামিনের ব্যবস্থা না হলে,তার পরিধানের পোশাক ছাড়া তল্লাশি করে সব কিছু হেফাজতে নিতে হবে। এবং তার তালিকা করে ১ কপি আসামির কাছে দিতে হবে। ফৌঃকাঃ ৫১ ধারা, পিআরবি ৩২২ বিধি।

২. আটক ব্যক্তির দেহে কোন আঘাতের চিহ্ন থাকলে নিরপেক্ষ সাক্ষী উপস্থিত করে তল্লাশি করতে হবে। পিআরবি ৩২৮ (খ) বিধি

৩. কোর্টের হাজতখানায় হতে জেলখানায় প্রেরণেন সময় তল্লাশির বিধান আছে। পিআরবি ৪৮৪ বিধি।


১৯// কমান্ড সার্টিফিকেট কাকে বলে? কোন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্য ইস্যূ করেন? এই সার্টিফিকেটের উপর কি কি উল্লেখ থাকে? কোন কোন ক্ষেত্রে এটি ইস্যু করা হয়? এটা প্রদানের উদ্দেশ্য কি?

উত্তরঃ যে কোন পুলিশ সদস্যদের ডিউটিতে নিয়োজিত হওয়ার পূর্বে,বাংলাদেশ ফরম নং ৫৩৩৬, বিপি ফরম নং ১০ এ, যা কার্বনসংযুক্ত দুই কপিতে, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর ও সীলমোহরযুক্ত যে আদেশনামা ইস্যু করা হয় তাকেই কমান্ড সার্টিফিকেট বা সিসি বলা হয়। পিআরবি ১৬৩,৯০৯ বিধি।

      ইহা এসআই এর নিম্ন পদমর্যাদার যে কোন পুলিশ সদস্য ইস্যু করতে পারেন?



এই সার্টিফিকেট এ যা যা উল্লেখ থাকেঃ

১. এটি বাংলাদেশ ফরম নং-৫৩৩৬, বিপি ফরম নং-১০
২. কর্তপক্ষের স্বাক্ষর, সীল,তারিখ ও সময়।
৩. জেলা ও থানার নাম।
৪. নিয়োজিত অফিসার ও সদস্যদের নাম।
৫. গন্তব্যস্থানের বিবরণ।
৬.প্রস্থান ও পৌঁছারনোর তারিখ ও সময়,ফেরত আসার তারিখ সময়।
৭. গ্রহণকারী অফিসারের স্বাক্ষর।


যে সকল ক্ষেত্রে এটি ইস্যু করা হয়ঃ

১.এসকট ডিউটির ক্ষেত্রে। পিআরবি ১৬৩ (ঙ)
২.আসামী গ্রেফতার ও পরোয়ানা তামিল করার জন্য। ফৌঃ কাঃ ৭৫,৭৬,৭৭ পিআরবি ৩১৫,৩১৬
৩.টহল ডিউটিতে নিয়োজিত হলে। পিআরবি ৩৫৬ বিধি।
৪.সমন ডিউটির ক্ষেত্রে। ফৌঃকাঃ ৬৮ ধারা, পিআরবি ৪৭১ বিধি।
৫.সরকারী ডাকবিলির করার জন্য।
৬.  ছুটি যাওয়ার ক্ষেত্রে।
পিআরবি ১৬৩,৯০৯ বিধি।


যে উদ্দেশ্য প্রদান করা হয়ঃ

১.ডিউটিতে নিয়োজিত অফিসারের নাম ও পদবী নির্ধারন করে, এবং অন্য সদস্যরা তার কথামত দায়িত্ব পালন করে।
২. নির্দিষ্ট দায়িত্ব কর্তব্য সুষ্ঠভাবে পালন শেষে যেনো ফিরতে পারে।
৩.সময়মত পৌঁছানো, ফেরায়,আদেশ তামিল করেছে কি করেনি তা যাচাই করার জন্য।
৪. দূর দূরান্ত যাওয়া আসার, তারিখ সময় নির্ধারন করে টিএ বিল করার জন্য।
৫. বাড়িতে ছুটি গেলে সময়মত পৌঁছানোর জন্য।


  ২০// হুলিয়া কাকে বলে? হুলিয়া জারির পদ্ধতি আলোচনা করো।

উত্তরঃ হুলিয়াঃ যদি কোন আসামি পলাতক বা ফেরার থাকে,তবে সেই আসামিকে হাজির করার জন্য আদালত ৩০ দিনের সময়,তারিখ ও নির্দিষ্ট স্থান উল্লেখ করে  ০২ দুই কপিতে  স্বাক্ষর ও,সীলমোহরযুক্ত যে আদেশনামা ইস্যু করেন তাকেই হুলিয়া বলে। ফৌঃ কাঃ ৮৭ ধারা, পিআরবি ৪৭২ বিধি।


হুলিয়া জারির পদ্ধতি নিচে আলোচনা করা হলোঃ

১. পলাতক আসামি যেখানে বাস করে, সেখানে প্রকাশ্য জনসম্মুখে হুলিয়াপত্র পাঠ করে শোনাতে হবে।

২.আসামির বাড়িতে প্রকাশ্য স্থানে লটকিয়ে দিতে হবে।

৩. আদালতের সামনে দেয়ালে,বা প্রকাশ্য স্থানে লটকাইতে হবে।
উল্লেখ্যযে উক্ত হুলিয়া জারির সময় সাক্ষী হাজির রেখে করতে হবে।
ফৌঃকাঃ ৮৭(১),৮৭(২) উপধারা। পিআরবি ৪৭২,৪৭২ খ)  বিধি।


২১.//ক্রোকি পরোয়ানা এবং ক্রোক কাকে বলে? ক্রোকি পরোয়ানা তামিল কিভাবে করতে হয়?

উত্তরঃ ক্রোকি পরোয়ানাঃ যদি কোন পলাতক বা ফেরার আসামি হুলিয়া জারির নির্দিষ্ট সময়ের পর হাজির না হয়,তবে আদালত উক্ত আসামিকে হাজির করার জন্য তার স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি হেফাজতে নেওয়ার জন্য স্বাক্ষর ও সীলমোহরযুক্ত যে আদেশনামা ইস্যু করেন তাকেই ক্রোকি পরোয়ানা বলে। ফৌঃ কাঃ ৮৮ (১) ধারা, পিআরবি ৪৭৪ বিধি।
ক্রোকঃ ক্রোক পরোয়ানা ইস্যুর পর আদালত যখন পলাতক আসামীর স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি হেফাজতে নিয়ে নেয় তাকেই ক্রোক বলে। ফৌঃ কাঃ ৮৮ ধারা, পিআরবি ৪৭৪ বিধি।

ক্রোক পরোয়ানা তামিলের পদ্ধতি নিচে আলোচনা করা হলেঃ

১. যে জেলায় আসামির নামে ক্রোক জারি হবে,সেই জেলার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটেরর মাধ্যমে আসামির নিজ থানায় ক্রোকি পরোয়ানা পাঠাইতে হবে। ফৌঃ কাঃ ৮৮(২) ধারা,
২. অস্থাবর সম্পত্তি হলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তা জব্দ করে হেফাজতে নেবেন।
ক. জব্দতালিকা প্রস্তুত করে।
খ. রিসিভার নিয়োগ করে।
গ.সম্পত্তি হস্তান্তর নিষিদ্ধ করে।
ঘ. আদালতের ইচ্ছানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
ফৌঃকাঃ ৮৮(৩)  ধারা,

৩. স্থাবর সম্পত্তির আদেশ হলে-
ক. দখল করে।
খ. রিসিভার নিয়োগ করে।
গ.হস্তান্তর নিষেধ করে।
ঘ. আদালতের ইচ্ছানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
ফৌঃকাঃ ৮৮(৪) ধারা,

৪. গৃহ পালিত পশু বা পঁচনশীল প্রকৃতির কিছু হলে বিক্রয়ের আদেশ দিতে পারেন। বিক্রীত অর্থ  সরকারী কোষাগারে জমা হবে। ফৌঃ কাঃ ৮৮(৫) ধারা।

৫.যদি পলাতক আসামি ক্রোকের তারিখ হতে ২ বছরের মধ্য হাজির হয়,তবে বিক্রিকৃত অর্থের খরচ ব্যতীত সকল অর্থ ও সম্পত্তি ফেরত দেয়া হবে। যদি ঐ আসামী ২ বছরেও হাজির না হয় তবে তার সম্পত্তিগুলো বাজেয়াপ্ত করা হবে। ফৌঃকাঃ ৮৯ ধারা, পিআরবি ৪৭৪ বিধি।


২২//  কোন আসামিকে আদালতে হাজির বা পলাতক বা ফেরার আসামিকে হাজির করানোর জন্য আদালত কি কি পদক্ষেপ নিতে পারেন?


উত্তরঃ যদি কোন আসামি পলাতক বা ফেরার থাকে তবে আদালত যে সকল পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন তা নিচে আলোচনা করা হলোঃ

১. আসামিকে নির্দিষ্ট তারিখ ও সময়ে হাজির করার জন্য সমন ইস্যু করতে পারেন। ফৌঃ কাঃ ৬৮ ধারা, পিআরবি ৪৭১ বিধি।

২.সমন জারির পর যদি আসামি হাজির না হয়, সে ক্ষেত্রে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করতে পারেন। ফৌঃকাঃ ৭৫ ধারা। পিআরবি ৪৬৮ বিধি।

৩. গ্রেফতারি পরোয়ানার পর যদি আসামি পলাতক বা ফেরার হয়,তবে আদালত ৩০ দিনের সময়,তারিখ, উল্লেখ করে ০২ কপিতে স্বাক্ষর ও সীলমোহরকৃত হুলিয়া ইস্যু করতে পারেন। ফৌঃ কাঃ ৮৭ ধারা, পিআরবি ৪৭২ বিধি।

৪. হুলিয়া জারির পরও যদি আসামি আদালতে হাজির না হয়, তবে  তার স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি আদালত ক্রোক করে হেফাজতর নিতে পারেন। ফৌঃ কাঃ ৮৮ ধারা, পি আরবি ৪৭৪ বিধি।

৫. হুলিয়া বা ক্রোকের মাধ্যমেও যদি আসামি হাজির না হয়,তবে আদালত নির্ধারিত, তারিখ ও সময় উল্লেখ করে সংবাদ পত্রে বা মিডিয়ায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারেন। সকল ক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে আসামীর অনুপস্থিতিতেই আদালত বিচারকার্য পরিচালনা করবেন। ফৌঃ কাঃ ৩৩৯ (খ)ধারা।


২৩//  পুলিশ আইনের ৩৪ ধারা শর্ত ও পূর্বশর্তগুলো কিকি?? একজন পুলিশ অফিসার তার থানা এলাকায় কিভাবে অপরাধ নিবারণ ও অপরাধী দমন করবেন? এ এস আই নিঃ ( পুস্তক সহ) ২০১৭

উত্তরঃ

 পুলিশ আইনের ৩৪ ধারা শর্তসমূহঃ

১. অনাবৃত যায়গায় গবাদিপশু জবাই করা যাবেনা এবং বেপরোয়া গাড়ী ঘোড়া ছোটানো বা কোন পশুকে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া যাবেনা
২. নিষ্ঠরতার সাথে কোন পশু- প্রাণী, জীব- জন্তুকে মারধর করা যাবেনা
৩. যে কোন যায়গায় গাড়ী ,ঘোড়া দাঁড় করিয়ে রাখা যাবেনা।
৪. খোলামেলা যায়গায় বিক্রয়েরর মাল ফেলে রাখা যাবেনা।
৫. রাস্তাঘাটে নোংরা আবর্জনার ফেলে দূর্গন্ধ সৃর্ষ্টি করা যাবেনা ।
৬. মদ্যপান করে রাস্তায় মাতাল অবস্থায় বেরানো যাবেনা
৭. রাস্তায় প্রস্রাব,পায়খানা করা যাবেনা , উলঙ্গ হয় বেরানো বা কুৎসিত ব্যাধি প্রদর্শন করা যাবেনা।
৮. পুকুর কুয়া বা বিপদজনক যায়গা ঘিরে না রাখলর।
উপরের অপরাধে কেউ জরিয়ে পরলে,তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যাবে। এবং তার বিরুদ্ধে নন- এফআইআর প্রশিকিউশন দাখিল করতে হবে।
পুলিশ আইন ৩৪ ধারা. পিআরবি ২৫৪,৩১৬ বিধি।

৩৪ ধারার পূর্ব শর্তগুলোঃ

১. এই অপরাধগুলো পৌর এলাকায় হতে হবে।
২.অপরাধের স্থানসমূহে পুলিশ অফিসারকে ডিউটিরত অবস্থায় থাকতে হবে।
৩.পুলিশ অফিসারকে পোশাক পরিহিত অবস্থায় থাকতে হবে।
৪. অপরাধগুলো অফিসারের সামনে হতে হবে।
৫.অপরাধগুলো জনসাধারণের অসুবিধা বা বিরক্তিকর কারন হতে হবে।
৬.অপরাধটি পুলিশ আইনের অন্তর্ভূক্ত হতে হবে।

একজন পুলিশ অফিসার তার থানা এলাকায় যেভাবে অপরাধ নিবারণ ও অপরাধীকে দমন করবেন তা নিচে আলোচনা করা হলোঃ

১.থানা এলাকায় অপরাধ সংঘটিত হলে প্রথমেই উর্ধ্বতন অফিসারদের অবগত করতে হবে এবং প্রতিরোধ করার চেষ্টা করতে হবে। পুলিশ আইন ২৩(৩) ধারা, ফৌঃকাঃ ১৫০ ধারা, পিআরবি ১২০ বিধি।

২.থানা এলাকায় যে কোন অপরাধ নিবারণ ও প্রতিরোধ করতে হবে। এবং জনসাধারনের বিরক্তিকর কাজ নিবারণ করতে হবে। পুলিশ আইনের ২৩(৪),২৩(৫) ধারা।

৩. যে কোন ধরনের অপরাধের অনুসন্ধান ও উদঘাটন করতে হবে। এবং অপরাধীকে বিচারের স্বার্থে আদালতে প্রেরণ করতে হবে। পুঃ আঃ ২৩(৬),২৩(৭) ধারা।

৪. আইনসঙ্গতভাবে গ্রেফতার যোগ্য সকল ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে হবে। পুঃ আঃ ২৩(৮) ধারা

৫. যে কোন অপরাধ সম্পর্কে ম্যাজিস্ট্রেটকে সংবাদ দিতে হবে। এবং আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ সকল ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট আবেদন করতে হবে। পুলিশ আইন ৪৪ ধারা,পিআরবি ২১৩। বিধি

৬. যে কোন সমাবেশ বা শোভাযাত্রা নিয়ন্ত্রনের জন্য লাইসেন্স প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।


৭. বেআইনি সমাবেশ অথবা দাঙ্গা অনুষ্ঠিত হতে চাইলে তা ছত্রভঙ্গের আদেশ দিতে হবে, এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। পুলিশ আইনের ৩০ ক (১,২) ধারা, ফৌঃকাঃ ১২৭,১২৮ ধারা, দঃবিঃ ১১৮,১৪৫ ধারা।

৮. জনসাধারণেরর চলাচলের স্থানে বা জনসমাগম বেশি এমন  রাস্তায় শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় ফোর্স মোতায়েন করতে হবে। পুলিশ আইন ৩১ ধারা, ফৌঃকাঃ ১৪৯ ধারা,পিআরবি ১১৮,১৪৫ বিধি।

৯. থানা পৌর এলাকাধীন হলে পুলিশ আইনের ৩৪ ধারার শর্ত ও পূর্ব শর্তগুলো পালন করতে হবে। পুলিশ আইনের ৩৪ ধারা, পিআরবি ২৫৪,৩১৬ বিধি।

১০. সিনেমা হলের টিকেট নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে বিক্রী হলে তা নিবারণ করার চেষ্টা করতে হবে।

১১. দৈনন্দিন যে কোন অপরাধেরর সংবাদ,গ্রেফতার, জামিন বা যে কোন সংবাদ আসলে জিডিতে লিপিবদ্ধ। করতে হবে। ফৌঃ কাঃ ১৫৪,১৫৫ ধারা,পিআরবি ৩৭৭ বিধি, পুলিশ আইন ৪৪ ধারা,সাক্ষ্য আইনের ৯/৩৫ ধারা।
১২. এলাকার গণ্য মান্য ব্যক্তিবর্গদের সঙ্গে নিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা ও ওপেন হাউজডে চালু করে থানা এলাকার অপরাধ নিবারণ ও অপরাধীকে দমন করতে হবে। পুলিশ আইন ১৭ ধারা,  পি আরবি ৬৭৪ বিধি।

২৪// ভিলেজ ক্রাইম নোট কাকে বলে? ইহা কয় ভাগে বিভক্ত,ও কি কি?

 উত্তরঃ  থানা এলাকাধীন ও গ্রামের সকল অপরাধীদের, সন্দেহজনক ব্যক্তিদের,সাজাপ্রাপ্ত ব্যাক্তিদের ও,পেশাগত অপরাধীদের তথ্য এবং অপরাধের বিবরণ থানার যে রেজিস্টারে লিপবদ্ধ হয় তাকেই ভিলেজ ক্রাইম নোট বলে। পুলিশ আইনের ১২ ধারা। পিআরবি ৩৯১ বিধি।

ভিলেজ ক্রাইম নোট ৫ ভাগে বিভক্ত।
১. অপরাধী রেজিস্টার।  ২. অপরাধ প্রমাণ রেজিস্টার।  ৩.গ্রামের তথ্য তালিকা। ৪. ইতিবৃত্ত পত্র।  ৫. নিরাক্ষাধীন ব্যক্তিদের তালিকা/সূচিপত্র।

১. অপরাধ রেজিস্টারঃ থানা এলাকার ও গ্রামের সকল পেশাগত অপরাধীদের তথ্যগুলো এই রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ হয়।পিআরবি ৩৯৩ বিধি।
২.অপরাধ প্রমাণ রেজিস্টারঃ যে সকল ব্যক্তিদেরর বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ হয়েছে এবং যাদের দন্ড ও হয়েছে, এই রকম ব্যক্তিদের বিবরণ এই অংশে লিপিবদ্ধ থাকে। পিআরবি ৩৯৪ বিধি।
৩.গ্রামের তথ্য তালিকাঃ এমন কোন বিশেষ ধরনের অপরাধ গ্রামে ব্যাপক ভাবে দেখা দিয়েছিলো,বা দিচ্ছে এই রকম তথ্য এই অংশে থাকে। পিআরবি ৪০০ বিধি।
৪.ইতিবৃত্ত পত্রঃ কোন পেশাগত অপরাধীদের সাথে জড়িত,এবং সন্দেহজনক প্রকৃতির এমন ব্যক্তিদের তালিকা এই অংশে লিপিবদ্ধ হয়। পিআরবি ৪০৩ বিধি।
৫.নিরাক্ষাধীণ ব্যক্তিদের তালিকাঃ নিরাক্ষাধীণ ব্যক্তিদের গতিবিধি ও তাদের তথ্য এবং দন্ডপ্রাপ্ত বা দন্ডপ্রাপ্ত হয়নি এমন সন্দেহজনক  ব্যক্তিদের নামের তালিকা সূচীসহ এই অংশে লিপিবদ্ধ করতে হয়। দন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নাম লাল কালি এবং দন্ড হয়নি তাদের নাম কালো কালি দিয়ে লিপিবদ্ধ করতে হয়। পি আরবি ৪০৪ বিধি।


২৫//মামলা তদন্তে এএসআই এর ভূমিকা কি? একজন এএস আই কিভাবে মামলা তদন্তকারী অফিসারকে সহায়তা করতে পারে?


উত্তরঃ-  মামলা তদন্তে এএসআই এর ভূমিকাঃ

  পিআরবি ২৫৫(ক) নিয়ম অনুযায়ী, সকল তদন্তের জন্য ক্ষমতাবান হলো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।(পুলিশ পরিদর্শক) 
তবে বিশেষ কিছু পরিস্থিতিতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএসআই মামলা তদন্ত করার নির্দেশ দিতে পারেন। পিআরবি ২৫৫ (খ) বিধি।
অফিসার ইনচার্জ বা এসআই এর অনুপস্থিতিতে একজন এ এসআই থানার চার্জ গ্রহণ করে মামলা তদন্ত করতে পারেন। ফৌঃকাঃ ৪(১) (ত) উপধারা,পিআরবি ২০১,২০৭,২৫৫ খ বিধি।
অফিসার ইনচার্জ বা এসআই এর অনুপস্থিতিতে একজন এ এসআই থানার চার্জ গ্রহণ করে অপমৃত্যু মামলার প্রাথমিক তদন্ত করতে পারেন।  পিআরবি ৩০০(ক) ২০৭(গ), ফৌঃকাঃ ১৭৪ পিআরবি ২৯৯ বিধি।
একজন এএসআই কে আইন ও বিধির সকল নিয়ম কানুন পালন করে মামলা তদন্ত করতে হবে,এবং সকল তদন্ত  কার্যক্রম গুলোর বিষয় গুলো পুলিশ সুপার,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার,এবং সহকারী পুলিশ সুপার কে অবহিত করতে হবে। ফৌঃকাঃ ১৫০ ধারা,পুলিশ আইন ২৩ ধারা,পিআরবি ১২০ বিধি।

একজন এএসআই যে সকল কাজে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সহায়তা করতে পারেনঃ

১. আসামি গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারেন। ফৌঃকাঃ ৪৬ ধারা,পিআরবি ৩১৬ বিধি।
২.ঘটনাস্থলের সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করার ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারেন। ফৌঃকাঃ ১৬১ ধারা,পিআরবি ২৬৫ বিধি।
৩.জব্দ তালিকা করার ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারেন। ফৌঃকাঃ ১০৩(২), পিআরবি ২৮০ বিধি।
৪.ক্রাইমসিন বা বস্তুগত সাক্ষ্য সংগ্রহের সহায়তা করতে পারেন। পিআরবি ৬৩৫,৬৩৮ বিধি।
৫.তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করার ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারেন। ফৌঃকাঃ ১০২,১০৩,১৬৫,১৬৬ পিআরবি ২৮০
৬.অপমৃত্যুর লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করার ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারেন। ফৌঃকাঃ ১৭৪ ধারা,পিআরবি ২৯৯,৩০০ক
৭.মামলার আলামত উদ্ধারের ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারেন। সাক্ষ্য আইন ৭,২৭,৪৫ ধারা
৮. মামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে সহায়তা করতে পারে। পিআরবি২৫৮ বিধি।
৯.জেনারেল ডায়রী লিপিবদ্ধ করার ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারে। পুলিশ আইন ৪৪ ধারা, ফৌঃকাঃ ১৫৪,১৫৫ পিআরবি ৩৭৭ বিধি।
১০.তদন্তকারি অফিসারের সকল করণিক ও রুটিন মাফিক কাজে সহায়তা করতে পারে। পিআরবি ২০৭ ক,খ

২৬// পুলিশ এ্যাক্ট ১৮৬১ এ বর্ণিত বিধানের মাধ্যমে আপনি পুলিশ অফিসার হিসেবে কিভাবে আপনার থানা এলাকায় অপরাধ নিবারণ ও অপরাধীকে দমন করবেন ব্যাখ্যা করেন?

উত্তরঃ ১৮৬১ সালে প্রণীত পুলিশ আইনের বিধান অনুসারে থানা এলাকায় যে সকল অপরাধ নিবারণ ও অপরাধীকে দমন করবো তা নিচে আলোচনা করা হলোঃ
১. পুলিশ আইনের ৩৪ ধারা অনুযায়ী পৌর এলাকায় যদি কোন ব্যক্তি নিচে বর্ণিত কোন অপরাধ করে তবে তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করবো।  এবং নন-এফআইআর প্রসিকিউশন দাখিল করে তাকে আদালতে পাঠাবো। পৌর এলাকর অপরাধ সমূহ:-
★অনাবৃত জায়গায় গবাদি পশু জবাই করলে বা মৃত পশুর চামড়া ছাড়ালে।
★নির্দয় বা নিষ্ঠুর ভাবে পশু কে মারধর করলে। 
★ জনসাধারণের অসুবিধা সৃষ্টি করে যেখানে সেখানে গাড়ী দাঁড় করে রাখলে। 
★বিক্রয় হবে এমন মালা মাল খোলা যায়গায় ফেলে রাখলে।
★ বেসামাল ভাবে মাতাল হয়ে রাস্তায় ঘুরলে।
★রাস্তায় যেখানে সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করলে এবং উলঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়ালে।
★পুকুর কুয়া বা বিপদজনক যায়গা ঘিরে না রাখলে।

২. কোন ব্যাক্তি সিনেমা হলের টিকেট নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্য নিয়ে দর্শক সারিতে বিতরণ করলে তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করবো। পুলিশ আইন ৩৪-ক ধারা
৩.থানা এলাকায় যে কোন অপরাধ নিবারণ ও প্রতিকার করবো। এবং জনসাধারণের বিরক্তিকর কোন কাজ৷ নিবারণ করবো। পুলিশ আইন ২৩- (৪),(৫) উপধারা।
৪.যে কোন রকমের অপরাধের বৃত্তান্ত অনুসন্ধান ও উদঘাটন করবো,এবং গ্রেফতারকৃত আসামিকে বিচারিক কাজে আদালতে হাজির করাবো। পুলিশ আইন ২৩-(৬),(৭) উপধারা।
৫.অপরাধ সংঘটন সম্পর্কে দ্রুত ম্যাজিষ্ট্রেট কে সংবাদ দিবো। এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপে ম্যজিস্ট্রেটের নিকট আবেদন করবো। পুলিশ আইন ২৪ ধারা,পিআরবি ২১৩ বিধি।
৬.থানা এলাকায় বেআইনি সমাবেশ  বা দাঙ্গা হাঙ্গামা অনুষ্ঠিত হলে ছত্রভঙ্গ হওয়ার আদেশ দেবো,এবং প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপের পদ্ধতি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। পুলিশ আইন ৩০ ক-১,২ উপধারা, ফৌঃকাঃ ১২৭,১২৮ ধারা,দঃবি ১৪১ ধারা
৭.থানা এলাকার রাজপথে,জনসাধারণের চলাচলের স্থানে, যেখানে জনসমাগম হয় সবসময়, এমন স্থান সমূহের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশ মোতায়েন করবো। পুলিশ আইন ৩১ ধারা, ফৌঃকাঃ ১৪৯ ধারা,পিআরবি ১১৮,১৪৫ বিধি।
৮.থানা এলাকার অপরাধ নিবারণ ও অপরাধীকে দমন করার জন্য থানা এলাকায় গণ্য মান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থাপনা ও ওপেন হাউজ ডে চালু করবো। পুলিশ আইন ১৭ ধারা, পিআরবি ৬৭৪ বিধি।
৯.থানায় এলাকার যে কোন ধরনের অপরাধের সংবাদ,আসামি গ্রেফতার, জামিন এবং দৈনন্দিন যে কোন প্রকারের সংবাদ আসলে তা জেনারেল ডাইরীতে লিপিবদ্ধ করবো এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। পুলিশ আইন ৪৪ ধারা, ফৌঃকাঃ ১৫৪,১৫৫ ধারা, পিআরবি ৩৭৭ বিধি। সাক্ষ্য আইন ৯/৩৫ ধারা।
১০. সবশেষে, যেকোন প্রকারের অপরাধ সংঘটন এবং তার বিবরণ সম্পর্কে, পুলিশ সুপার,অতিঃ পুলিশ সুপার, ও সহকারী পুলিশ সুপার কে অবগত করবো। পুলিশ আইনের ২৩(৩), ফৌঃকাঃ ১৫০ পিআরবি ১২০ বিধি।


  ২৭// অসদাচরণ কাকে বলে? কর্তব্য সম্পাদন কালে কোন কার্যক্রম গুলোকে অসদাচরণ বলা হয়ে থাকে? 

উত্তরঃ অসাধারণঃ

       সরকারি চাকরিতে কর্মরত অবস্থায় যদি কোন ব্যাক্তি অশোভনীয়,অনাকাঙ্খিত ও অবৈধ কাজে লিপ্ত হয়।যা করলে আইন শৃঙ্খলা ও সরকারের সুনাম নষ্ট হয়,যেগুলো আইন ও বিধি বিধানের পরিপন্থী, শীষ্টাচারহীণ ক্ষতিকর কাজ। এমন কোন কাজ করাকেই অসাদাচরণ বলা হয়। ১৯৮৫ এর আইন শৃঙ্খলা বিধিমালা ২ (এফ), ১৯৭৬ এর পুলিশ অফিসার্স ( বিশেষ বিধান) ২-খ, ডিএমপি অধ্যাদেশ ৪৮ ধারা।

  কর্তব্য সম্পাদনকালে যেসকল কার্যক্রম গুলো অসাদাচরণের অন্তর্ভুক্ত হবে তা নিচে আলোচনা করা হলোঃ

      ১.কোন ব্যাক্তি যদি কোন নিয়ম ও আদেশ নিজ ইচ্ছায় অমান্য করে,গাফিলতি করে, কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে চাকরি ছেড়ে দেয়। কোন কারন ছাড়াই ছুটিতে গিয়ে অতিবাস করে। কিংবা চাকরিতে থাকা অবসথায় অন্য কোন চাকরি বা ব্যবসা করে। কর্তব্য থাকা অবসথায় ভীরুতা প্রদর্শন করে। আসামি গ্রেফতারের পর শারিরীক নির্যাতন করে। এমন কোন কার্যক্রম করে থাকলেই সেই ব্যাক্তির অসদাচরণ অন্তর্ভুক্ত হবেন।
পুলিশ আইন -৯,১০,২৯-(১,২,৩,৪,৫,৬,৭) ধারা, পি আরবি -১০৯ বিধি,দন্ড বিধি -১৬৮,৩৩০,৩৩১ ধারা।

    ২.যদি কোন ব্যক্তি সাধারণ জনগণের সাথে বদ মেজাজী,রূঢ়তা,নিষ্ঠুর আচরণ করে,চাঁদা দাবি করে। সরকারি কর্মচারী বিধিমালার নিয়ম অমান্য করে,সংবাদ সংস্থায় সাংবাদিকতা করে। সরকারি নীতিমালা নিয়ে সমালোচনা করে। অপরের কাছে টাকা ধার নেয়া বা দেয়া করে। সরকারি মালামালে নিলামে ডাক দেয়। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছারা কর্মস্থল ত্যাগ করে। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে পক্ষ বিপক্ষেকে হয়রানি  করে। এমন কোন কার্যক্রম করলেই অসাদারনের অন্তভূক্ত হবে। 
পিআরবি-৩৩(২),৮৭,১০৬,১০৭,১০৮,১০৯,১১০,১১৫,২৬০ বিধি।

     ৩. যদি কোন পুলিশ সদস্য কোন অপরাধে দোষী সাব্যস্থ হয় তবে তার বিচারের কার্যক্রমের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে প্রেরণ করা যাবে। পুলিশ আইন ২৯ ধারা,পিআরবি ৪৩৪ বিধি।

      ৪.পুলিশ সদস্যর অসদাচরণের দুই রকম শাস্তির ব্যবস্থা আছে। (ক) গুরুদন্ড (খ) লঘুদন্ড
পিআরবি-৮৫৭,৮৬১,৮৭১,৮৮০ ডিএমপি অধ্যাদেশ ১২ ধারা।


২৮//অযোগ্য/অধর্তব্য অপরাধের কোন কোন ক্ষেত্রে পুলিশ অফিসার বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারে? ফৌজদারি কার্যবিধি আইনে আলোচনা করো? 

উত্তরঃ যে সকল ক্ষেত্রে অধর্তব্য অপরাধে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যায় তা ফৌজদারি কার্যবিধির আইনে আলোচনা করা হলোঃ

১. আইনসঙ্গত কোন অজুহাত ছাড়াই যদি কোন ব্যক্তির নিকট ঘর ভাঙার যন্ত্রপাতি থাকে তবে তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারবে। ফৌঃকাঃ ৫৪(২) ধারা
২.অপরাধী হিসেবে সরকারি আদেশ হয়েছে এই রকম ব্যক্তিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যাবে। ফৌঃকাঃ ৫৪(৩)
৩.চোরাইমাল আছে এমন সন্দেহে কোন ব্যাক্তি বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যাবে। ফৌঃকাঃ ৫৪(৪)
৪. পুলিশ অফিসারের কাজে বাঁধা প্রদানকারী ব্যক্তিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যাবে। ফৌঃকাঃ ৫৪(৫)
৫.ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৬৫(৩) উপধারা লঙ্ঘনকারী ব্যক্তিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারবে। ফৌঃকাঃ ৫৪(৮)
৬.নাম ঠিকানা জানাতে অস্বীকৃতি জানায় এমন ব্যক্তি কে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারে। ফৌঃকাঃ ৫৭(১)
৭.জামানত দিতে অপারোগতা ব্যক্তির যাহার কারাগারে থাকা অবসথায় জামিন হয়েছে। সে যদি আদালতের দেয়া শর্ত ভঙ্গ করে তবে তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যাবে। ফৌঃকাঃ ১২৪(৬)
৮. ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৭০ ধারায় উল্লেখিত সাক্ষী যদি আদালতে হাজির অথবা মুচলেকা দিতে রাজি না হয় তবে তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যাবে। ফৌঃকাঃ ১৭১ ধারা
৯. যে শর্তে দন্ড মাফ করা হয়েছে, সেই শর্ত যদি ভঙ্গ করা হয় তবে তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যাবে। ফৌঃকাঃ ৪০১(৩)


২৯// মাদকদ্রব্য কাকে বলে? মাদকদ্রব্য আইন অনুযায়ী বিনা পরোয়ানায় তল্লাশির পদ্ধতি আলোচনা করেন।
উত্তরঃ মাদক দ্রব্যঃ যে সকল দ্রব্য সেবন করলে নেশা হয় এবং অপ্রকৃস্থ হয়,দেহ ও শরীরের পরিবর্তন ঘটে,স্মৃতিশক্তি, যৌনশক্তি হ্রাস পায় এবং কর্মদক্ষতা কমে যায় তাকেই মাদকদ্রব্য বলে। মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন (সংশোধন ২০০৪) ২ ঠ ধারা।
মাদকদ্রব্য আইন অনুযায়ী বিনা পরোয়ানায় তল্লাশির পদ্ধতিঃ
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ৩৬(১) উপধারা অনুসারে মহাপরিচালক এর নিকট হতে সাধারণ বা বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা বা পুলিশ পরিদর্শক বা এমন পদমর্যাদার কোন কর্মকর্তার এই রকম বিশ্বাস করার কারন থাকে যে এই আইনের অধীনে কোথাও অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে বা হওয়ার সম্ভাবনা আছে,তাহলে এই রকম বিশ্বাসের কারন লিপিবদ্ধ করে যে কোন সময়---
১. উক্ত৷ স্থানে প্রবেশ করে তল্লাশি করতে পারবেন এবং বাধাপ্রাপ্ত হলে দরজা জানালা ভাঙ্গাসহ যে কোন পদক্ষেপ  নিতে পারবেন। ফৌঃকাঃ ৪৮,১০২(২)
২.এই আইনের আওতায় তল্লাশিকালে প্রাপ্ত অপরাধ সংঘটনে ব্যবহার্য মাদকদ্রব্য বা বস্তু,আটক বা বাজেয়াপ্ত বস্তু এবং কোন অপরাধ প্রমাণে সহায়ক কোন দলিল-দম্তাবেজ বা জিনিসপত্র আটক করতে পারবেন।  ফৌঃকাঃ ১০৩(২) উপধারা,পিআরবি ২৮০ বিধি।
৩.সন্দেহ হলে উক্ত স্থানে উপস্থিত যে কোন ব্যক্তিকে তল্লাশি করতে পারবেন। ফৌঃকাঃ ৫১,৫২,১০২(৩) উপধারা। পিআরবি ২৮০ বিধি
৪.উক্ত স্থানের যে কোন ব্যক্তিকে সন্দেহজনক মনে হলে গ্রেফতার করতে পারবেন। ফৌঃকাঃ ৫৪ ধারা,পিআরবি ৩১৬ বিধি।
৩৬(১) যাই থাকুক না কেনো কর্মকর্তার যদি বিশ্বাস করার মত যুক্তিসঙ্গত কারন থাকলে এই বিশ্বাসের কারন লিপিবদ্ধ করে সূর্যোদয় হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যে কোন স্থানে প্রবেশ করে তল্লাশি  পরিচালনা করতে পারবেন। মাঃদ্রনিঃ ৩৬(২)


৩০// পুলিশ আইন অনুযায়ী পুলিশ অফিসারের ক্ষমতা কি কি? পুলিশ অফিসার কি ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে? 

উত্তরঃ
        পুলিশ আইন অনুযায়ী পুলিশের ক্ষমতা গুলো আলোচনা করা হলোঃ

১.পুলিশ প্রধান আইজিপি মহোদয় দেশের যে কোন স্থানে অপরাধ দমন, গ্রেফাতার, গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং যেকোন তদন্তের ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে। পুলিশ আইন ৫ ধারা,ফৌঃকাঃ ১২ ধারা,পিআরবি ৩৫(খ) বিধি।
২.সরকারের অনুমতিক্রমে আইজিপি মহোদয় পুলিশ বাহিনীর সকল ধারাবাহিক কার্যক্রম সম্পর্ক  নিয়ম কানুন প্রণয়ন করতে পারবেন। পুলিশ আইন ১২ ধারা।
৩. যে কোন সরাবখানা,জুয়ারআড্ডা,সন্দেহজনক উশৃঙ্খল লোকদের সমাগমস্থলে পুলিশ অফিসার বিনা পরোয়ানায় প্রবেশ করতে পারবে এবং নজরদারি করতে পারবেন। পুলিশ আইন ২৩ ধারা
৪.উর্ধ্বতন পুলিশ অফিসার যে কোন জনশোভা,শোভাযাত্রা, এবং মিছিলমিটং  নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন।  কখন কোথায় বা কোন স্থানে জনসমাবেশ, শোভাযাত্রা হবে তা নির্ধারণ করতে পারবেন। প্রয়োজনে লাইসেন্স প্রদান করতে পারবেন। পুলিশ আইন ৩০ ধারা।
৫. কোন অবৈধ জনসমাবেশ বা শোভাযাত্রা কে পুলিশ অফিসার ছত্রভঙ্গ হওয়ার আদেশ দিতে পারেন। এবং আদেশ অমান্য করলে বল প্রয়োগ করতে পারবেন। পুলিশ আইন ৩০ ক (১,২) ধারা, ফৌঃকাঃ ১২৭,১২৮, পিআরবি ১৪২,১৪৩
৬. পৌর একাকায় পুলিশ আইনের ৩৪ ধারায় উল্লেখিত কোন অপরাধ করলে যে কোন পদের পুলিশ অফিসার বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারবেন। পিআরবি ৩১৬ বিধি
৭. সিনেমা হলের প্রবেশের স্থানে যদি কোন ব্যক্তি নির্ধারিত টিকেটের চেয়ে অধিক মূল্য টিকেট বিক্রি করে তবে এমন অপরাধে পুলিশ অফিসার বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারবেন। পুলিশ আইন ৩৪ ক ধারা। পিআরবি ৩১৬ বিধি,ডিএমপি অধ্যাদেশ ১০০
৮. কোন অপরাধজনক সংবাদ থানায় আসলে পুলিশ অফিসার জেনারেল ডাইরীতে লিপিবদ্ধ করতে পারবেন এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। পুলিশ আইন ৪৪ ধারা, ফৌঃকাঃ ১৫৪,১৫৫ ধারা,পিআরবি ৩৭৭ বিধি,সাক্ষ্য আইন ৯, ৩৫ ধারা।
পুলিশ অফিসার ম্যাজিস্ট্রের ক্ষমতা প্রয়োগঃ
১. পুলিশ প্রধান বা আইজিপি মহোদয় অপরাধ দমনের জন্য দেশের যে কোন যায়গায় ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন। পুলিশ আইন ৫ ধারা।
২. ম্যাজিস্ট্রের অনুপস্থিতিতে এএসপি পদ হতে উর্ধ্বতন পুলিশ অফিসার যে কোন অপরাধ দমনে, তদন্তে,গ্রেফতারে , গোপন সংবাদ সংগ্রহে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে। ফৌঃকাঃ ১২ ধারা,পিআরবি ৩৫(খ)
৩.মোটরযান আইন অনুযায়ী অপরাধের জরিমানা ও অপরাধ সম্পর্কিত বিষয় আপোষ মিটানোর ক্ষেত্রে  ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন।
মোটরযান আইন ১৫৯,১৬৩,১৭০ ধারা। 


৩১// অবৈধ জনতা বলতে কি বোঝেন? বৈধ জনতা কি অবৈধ হতে পারে? অবৈধ জনতা ছত্রভঙ্গ করার ক্ষেত্রে পুলিশ অফিসারের করণীয় কি?

উত্তরঃ
অবৈধ জনতা :- পাঁচ বা তার অধিক ব্যক্তিগন একত্রে মিলিত হয়ে সরকারি কর্মচারীর কাজে বাধা প্রদান করে,আইন প্রয়োগে বাধা প্রদান করে,ভয়ভীতি ও আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করে, অবৈধ বল প্রয়োগ করে কোন গৃহে প্রবেশ করে,জনসাধারণের চলাচলের বাধা সৃষ্টি করে, তাহলে উক্ত জনতাদেরকে অবৈধ জনতা বলা হয়। 
দন্ডবিধি আইনের ১৪১ ধারা  (শাস্তি দঃবিঃ ১৪৩ ধারা) 

যেভাবে বৈধ জনতা অবৈধ হতে পারেঃ- 
      । পুলিশ আইনের ৩০ (১,২,৩) ধারার অধীনে কোন বৈধ সমাবেশের লাইসেন্স নেয়ার পর যদি ঐ সমাবেশ উক্ত  লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে,সরকারি কর্মচারীর কাজে বাধা প্রদান করে,আইন প্রয়োগে বাধা প্রদান করে,ভয়ভীতি ও আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করে, অবৈধ বল প্রয়োগ করে কোন গৃহে প্রবেশ করে,জনসাধারণের চলাচলের বাধা সৃষ্টি করে, তাহলে উক্ত বৈধ সমাবেশ বা জনতারাই অবৈধ জনতা য় পরিণত হবেন। 
পুলিশ আইন ৩০ ক (১,২) ধারা, ফৌঃ কাঃ ১২৭,১২৮ ধারা,পিআরবি ১৪২,১৪৩ বিধি

 অবৈধ জনতা ছত্রভঙ্গ করার ক্ষেত্রে পুলিশ অফিসারের করণীয়ঃ-
১.সঙ্গীয় ফোর্সদের উদ্দেশ্য ব্রিফিং প্রদান করবেন।পিআরবি ১৫২ বিধি
২.  অবৈধ সমাবেশটিতে হুশিয়ার জারি করবেন।
৩.ছত্রভঙ্গ হওয়ার মৌখিক আদেশ দেবেন।   কাঃ ১২৭ ধারা, পুলিশ আইন ৩০ ক (১) ধারা, পিআরবি ১৪২ বিধি

৪. ছত্রভঙ্গ না হলে বল প্রয়োগ করেবন।কাঃ ১২৮ ধারা, পুলিশ আইন ৩০ ক (২) ধারা, পিআরবি ১৪৩ বিধি
৫. জনসাধারণের সাহায্য নেবেন, ও অপরাধীদের বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করবেন।  ফৌঃকাঃ ৪২,১৫১, পিআরবি ৩১৬ বিধি
৬.অবৈধ জনতা উগ্র ও মারাত্মক আচরণ করলে  আগ্নেয়াস্ত্র ব্যাবহার করতে হবে, এবং যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই করতে হবে। পিআরবি ১৫৩, ১৫৪,১৫৫ বিধি।
৭. আহতদের হাসপাতালে পাঠাতে হবে। পিআরবি ৩১২ বিধি
৮. মৃতদের মর্গে পাঠাতে হবে। পিআর বি ৩০৪,৩০৫ বিধি
৯. গুলির খোসা সংগ্রহ করে মিলাইতে হবে।
১৯. বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষ কে অবগত করতে হবে।  ফৌঃকাঃ ১৫০ ধারা,পুলিশ আইন ২৩(৩) ধারা,পিআরবি ১২০ বিধি।
২০. থানায় এসে জিডিতে লিপিবদ্ধ করতে হবে,। 
ফৌঃকাঃ ১৫৪,১৫৫ ধারা, পুলিশ আইন ৪৪ ধারা,পিআরবি ৩৭৭ বিধি, সাক্ষ্য আইন  ৯/৩৫ ধারা
২১. অফিসার ইনচার্জ কে অবগত করবেন।  ফৌঃ কাঃ ১৬৮ ধারা।
   












এই লেখাগুলো এ্যাপস আকারে পেতে চাইলে এই লিংকে প্রবেশ করুন    http://app.appsgeyser.com/5895474/Police%20Law%20preparation






Comments

Popular posts from this blog

এমসিকিউ(MCQ) মডেল টেস্ট ★ফৌজদারী কার্যবিধি★

এমসিকিউ (Mcq) ★★★ সাক্ষ্য আইন ★★★

কনষ্টবল/নায়েক হতে এএসআই পদোন্নতি পরীক্ষার সাজেশন মূলক প্রস্তুতি -২০১৯